নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে মিথ্যা গুজব রটিয়ে, ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে হেযবুত তওহীদের দুই সদস্যকে নৃশংসভাবে হত্যা, বাড়িঘর লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে নোয়াখালী জেলা হেযবুত তওহীদ। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় নোয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবের সামনে হেযবুত তওহীদের নেতাকর্মীরা এ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন, নোয়াখালী জেলা সভাপতি মো. গোলাম কবির, কেন্দ্রীয় সহকারী সাহিত্য সম্পাদক রাকীব আল হাসান প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও অপরাধীদের আজও বিচার হয়নি। হামলার ঘটনায় জড়িত থাকা বহু আসামী স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর আশ্রয়ে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিন্তু পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করছে না। আর সেই সুযোগ নিয়ে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও কুচক্রী মহল পুনরায় হেযবুত তওহীদের এমামের বাড়িতে হামলার ষড়যন্ত্র করছে। এসময় তারা সোনাইমুড়ির পোরকরায় অবস্থিত হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন কৃষিভিত্তিক, শিল্পভিত্তিক ও শিক্ষামূলক উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
মানববন্ধনে সেদিনের ঘটনায় নির্মমভাবে খুন হওয়া ইব্রাহিম রুবেলের স্ত্রী হাজেরা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মসজিদ নির্মাণের মত পবিত্র কাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে গিয়ে নির্মমভাবে খুন হয় আমার স্বামী। এই উগ্রবাদী ধর্মব্যবসায়ীরা প্রচার করতে থাকে যে, হেযবুত তওহীদ খ্রিষ্টান, তারা গ্রামে একটি গির্জা নির্মাণ করছে। এসব গুজব ছড়িয়ে ঘটনার দিন বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসা থেকে ছাত্রদের নিয়ে এসে ‘খ্রিষ্টান মারো, গির্জা ভাঙো’ স্লোগান দিয়ে তারা একযোগে হামলা চালায়। তারা আমার স্বামীর হাত-পায়ের রগ কাটে, দুই চোখ উপড়ে ফেলে, পরে জবাই করে আগুনে পুড়িয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে। কি দোষ ছিল আমার স্বামীর? আমি কেন বিচার পাব না? কেন বিচারের দাবিতে আমাকে রাস্তায়-রাস্তায়, দ্বারে-দ্বারে ঘুরতে হবে? আর কতকাল ধর্মের মুখোসধারী, ধর্মব্যবসায়ী গুজব-সন্ত্রাসীদের এভাবে প্রশ্রয় দিয়ে যাওয়া হবে? আমি এর জবাব চাই, আমার স্বামীর খুনীদের বিচার চাই। মানববন্ধন শেষে হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে এবং উগ্রতা, ধর্মব্যবসা, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ সোনাইমুড়ি উপজেলার পোরকরা গ্রামে হেযবুত তওহীদের এমামের বাড়িতে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। ধর্মব্যবসায়ী উগ্রবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নির্মাণাধীন মসজিদকে গির্জা বলে গুজব রটিয়ে দিয়ে সেদিন হেযবুত তওহীদের সদস্য ইব্রাহিম রুবেল ও সোলায়মান খোকনকে হত্যা করে।