
নরসিংদী সংবাদদাতা:
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় হেযবুত তওহীদের নারী সদস্যদের উপর সন্ত্রাসী হামলা ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তাদের অপহরণ চেষ্টা করে উগ্রবাদী সন্ত্রাসীরা। এ সময় সন্ত্রাসীদের মারধরে গুরুতর জখম হয়েছেন তিন নারী। আহতরা হলেন, নরসিংদী শাখার নারী সদস্য জোবাইদা খাতুন (৩৮), আয়েশা আক্তার খাদিজা (২৩), শান্তনা আক্তার নিপা (২০)।
মঙ্গলবার (১৮ জুন ২০২৪) দুপুর দেড়টার দিকে রায়পুরা থানাধীন হাসনাবাদ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাসেল মিয়া (৩৫) ও তার সহযোগী ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী জোবাইদা খাতুনের স্বামী ও হেযবুত তওহীদের নরসিংদী জেলা সভাপতি মোঃ মোকশেদ মিয়া।
প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হেযবুত তওহীদের সাংগঠনিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১৮ জুন ২০২৪খ্রি. তারিখ ঈদের দ্বিতীয় দিন সংগঠনের নরসিংদী শাখার নারী সদস্য জোবাইদা খাতুন (৩৮), আয়েশা আক্তার খাদিজা (২৩), শান্তনা আক্তার নিপা (২০) দৈনিক দেশেরপত্র পত্রিকাটি ব্যাপকভাবে প্রচারের উদ্দেশ্যে বের হন। পত্রিকা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে উল্লিখিত সদস্যাগণ তারা দুপুর দেড়টার দিকে রায়পুরা থানাধীন হাসনাবাদ বাজারের গোলজার মেম্বার মিষ্টান্ন ভান্ডারের দোকানের সামনে দৈনিক দেশেরপত্র পত্রিকা বিক্রয় করার সময় রায়পুরা থানার আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সানাবাদ এলাকার রাসেল মিয়া (৩৫) সহ অন্তত ১০-১২ জন জোবাইদা খাতুন (৩৮), আয়েশা আক্তার খাদিজা (২৩) এবং শান্তনা আক্তার নিপা (২০) কে পত্রিকা বিক্রয় করতে নিষেধ করে। তখন তারা পত্রিকা বিক্রয়ে নিষেধের কারণ জানতে চাইলে রাসেল মিয়া সহ অন্যরা দৈনিক দেশেরপত্র পত্রিকা নিষিদ্ধ, তোমরা আমাদের বাজারে এই পত্রিকা বিক্রয় করতে পারবে না। এই কথা বলে তারা পত্রিকা বিক্রয় প্রতিনিধিগনদের নিকট হইতে পত্রিকা টানা হেচরা করে নেয় এবং ছিড়ে ফেলে। তারা নারীদেরকে অকথ্য ভাসায় গালি-গালাজ করতে থাকে
“পত্রিকা ছিড়ে ক্ষান্ত না হয়ে একপর্যায়ে রাসেল সহ অন্যরা উত্তেজিত হয়ে হেযবুত তওহীদের নারী সদস্যদের টানা হেচড়া করে জোরপূর্বকভাবে একটি অটো রিকশার মধ্যে তোলার চেষ্টা করে ও শ্লীলতাহানী ঘটায়। তারা অটো রিকশা থেকে নেমে পড়লে রাসেলসহ সন্ত্রাসীরা একটি প্রাইভেটকার এনে আবারও জোরপূর্বকভাবে প্রাইভেটকারে উঠানের চেষ্টা করে এবং শ্লীলতাহানী ঘটায়। তখন হেযবুত তওহীদের সদস্যগণ প্রাইভেটকারে উঠতে অস্বীকার করলে রাসেল মিয়া মোটা বাশের লাঠি এনে জোবাইদা খাতুন এর মাথায় বারী দেয়। এতে জোবাইদা খাতুনের মাথা ফেটে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে রাসেল। সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা জোবাইদা খাতুন (৩৮) ছাড়াও আয়েশা আক্তার খাদিজা (২৩) ও শান্তনা আক্তার নিপাকে মোটা লাঠি দিয়া এলোপাথারী মারধর, কিলঘুষি, লাথি মেরে গুরুতর জখম করে।”
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা আরও জানান, সন্ত্রাসীরা হেযবুত তওহীদের নারী সদস্যদের পরনের কাপড় চোপর ধরে টানা-হেচরা করিয়া শ্লীলতাহানী ঘটায়। সন্ত্রাসী রাসেল শান্তনা আক্তারের হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলে। সন্ত্রাসী কায়দায় তারা নারী সদস্যদেরকে প্রকাশ্যে হুমকি দেয় যে, আর যদি কোন দিন বাজারে পত্রিকা বিক্রয় করতে আসে তাহলে তাদের হত্যা করবে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় জোবাইদা খাতুনসহ অন্যদেরকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জোবাইদা খাতুন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নরসিংদী জেলা হেযবুত তওহীদ ও নরসিংদীতে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান তারা।