
চিলাহাটি (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারী জেলার চিলাহাটির ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের বিওপি বাজারে পেকিন হাঁসের পল্লী গড়ে উঠেছে। মঙ্গাপীড়িত এ এলাকার মানুষের একসময় অভাব-অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। তবে পেকিন হাঁস পালনে অনেকেই এখন স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।
বিওপি বাজারের প্রতিটি বাড়িতে ছোট-বড় হাঁসের খামার দেখা যায়। পেকিন হাঁস পালনের মাধ্যমে অনেকের জীবনমান বদলে গেছে। গোসাইগঞ্জ গ্রামের মেরিনা বেগম পেকিন হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) অর্থায়ন এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শার্পের কারিগরি সহযোগিতায় খামার শুরু করেন। প্রথমে ১০০টি হাঁসের বাচ্চা নিয়ে যাত্রা শুরু করেন এবং শার্প থেকে হাঁস পালনবিষয়ক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
মেরিনা বেগমের মতো মনোয়ারা বেগম, মোর্শেদা বেগম, মরিয়ম আক্তার, লায়লা, ফাতেমা মনি, নুজিনা বেগম, আম্বিয়া, আকতারা ও আলেমা বেগমের বাড়িতেও এখন রয়েছে ছোট-বড় হাঁসের খামার।
পেকিন হাঁস খামারি মোর্শেদা ও মরিয়ম জানান, শার্প থেকে তাদের ৫০টি করে মোট ১০০টি হাঁস, খাদ্যসহায়তা, মাচা নির্মাণের খরচ, টিকা ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। প্রতি ১০০টি হাঁস পালনে ২৪-২৫ হাজার টাকা খরচ হলেও বাজারে এ হাঁস বিক্রি করে ৬০-৬৫ হাজার টাকা আয় করা যায়। এ হাঁসের মাংস সুস্বাদু, নরম এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর হওয়ায় সব বয়সের মানুষ এটি পছন্দ করেন।
পেকিন হাঁস একটি ব্রয়লার জাতের হাঁস যা মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। এটি দ্রুতবর্ধনশীল এবং ৬০-৭০ দিনে গড়ে ২.৫-৩ কেজি ওজনের হয়। বছরে প্রতিটি হাঁস ২২০-২৫০টি ডিম দেয়।
শার্প চিলাহাটি শাখার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোশারফ হোসেন বলেন, পেকিন হাঁস দেখতে সুন্দর এবং দ্রুতবর্ধনশীল হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এটি চীনের একটি জনপ্রিয় বাণিজ্যিক জাত যা পশ্চিমা বিশ্বে পরিচিতি পায় অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি।
পেকিন হাঁসের খামার স্থাপনার এ উদ্যোগ চিলাহাটির মঙ্গাপীড়িত এলাকার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।