
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
উত্তরের গেটওয়ে হিসেবে পরিচিত নীলফামারীর শহর সৈয়দপুর। রংপুর ও দিনাজপুর জেলার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ শহরে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা-শহরের লোকজন আসেন। সড়ক, রেল ও বিমানের যোগাযোগ থাকলেও সৈয়দপুরের রাস্তাঘাট উন্নত নয়, তবে অত্যন্ত ব্যবহৃত। মানুষের চলাচলের সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে, কিন্তু মানুষ চরম বিড়ম্বনায় পড়েন যখন শহরের রাস্তায় গরু-ছাগলসহ গৃহপালিত পশুর অবাধ চলাচল থাকে।
শহরের সচেতন নাগরিকদের মতে, শহরে অবাধে গবাদিপশু চলাচল করে। কেউ কেউ রাস্তার ধারে গরু-ছাগল চরান, এতে যাতায়াতকারী মানুষ দুর্ভোগে পড়ছেন। ইতোমধ্যে কিছু ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটেছে, এবং বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা বাড়ছে। ৩৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সৈয়দপুর পৌরসভায় চলাচলের জন্য পাকা ও কাঁচা সড়ক রয়েছে।
জানা যায়, পৌরসভার প্রশাসক ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-ই আলম সিদ্দিকী বর্তমানে পাকা সড়ক মেরামত ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। শহরের ব্যস্ততম শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক মেরামতের পর রেলওয়ে কারখানার সড়কটি মেরামত হচ্ছে। এরপর শহরের সবচেয়ে জরাজীর্ণ তামান্না মোড় থেকে ওয়াপদা পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে।
শহরের ব্যস্ত সড়কগুলোতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রেললাইন বরাবর গবাদিপশু অবাধে চরে বেড়ায়। কখনো বাসের নিচে, কখনো ট্রেনে কাটা পড়ে এসব পশুর মৃত্যু ঘটে। রাস্তার ধারের হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে খাবারের লোভে পশুগুলো ঢুকে পড়ে, ফলে দোকানের ক্রেতারা সমস্যায় পড়েন। গলায় দড়ি না থাকায় পশুগুলোকে সহজে আটকানো সম্ভব হয় না। মানুষ শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কায় পশুগুলোকে ধরতেও সাহস পান না।
সাহেবপাড়ার রজব আলী জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই গবাদিপশু একক বা দলগতভাবে রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। বহু গবাদিপশু ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছে এবং বড় দুর্ঘটনা থেকে ট্রেন রক্ষা পেয়েছে। এখনও এ সমস্যার উন্নয়ন হয়নি। গবাদিপশু মালিকরা এ ব্যাপারে সচেতন হন না, ফলে মানুষও নানা বেকায়দায় পড়ছে।
বাঙ্গালীপুর নিজপাড়ার বাসিন্দা আজহার আলী জানান, তিনি রংপুর রোড হয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফেরার সময় একটি গরু সামনে চলে আসে। দ্রুত ব্রেক ধরায় তিনি পড়ে গিয়ে মারাত্মক আহত হন।
ইউএনও নূর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে এবং মাইকিং করে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শহরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং মানুষের সমস্যা হয় এমন কাজ থেকে পৌরবাসীকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।