
সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়মোহন রায়ের হামলায় এক কলেজ শিক্ষার্থীর পরিবারের ৩ জন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত শিক্ষার্থীর চাচা (৫৫) কে ফরিদপুরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীর বাবা (৫০) ও শিক্ষার্থীর চাচাতো ভাই (১৯) কে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। শুক্রবার (১০ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায় মোহন রায় উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া এলাকার মৃত রঞ্জিত রায়ের পুত্র।
ভুক্তভোগী পরিবারটির অভিযোগ, ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করে হামলা ও বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতা ও আতংকে সময় পার করছে ভুক্তভোগি ঐ কলেজ শিক্ষার্থী ও তার পরিবার। এই বিষয়ে শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগির মা সালথা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
ভুক্তভোগী পরিবারটি জানায়, বিগত কয়েক বছর ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়মোহন রায় ঐ কলেজ শিক্ষার্থীকে ইভটিজিং করে আসছিলো। স্কুলে পড়াকালীন সময়ে বিরক্তের এক পর্যায়ে স্থানীয় ভাবে বিষয়টি শালিস মিমাংসা হয়। পরবর্তীতে সে ফরিদপুরের একটি কলেজে ভর্তি হওয়ার পরও রায়মোহন রায় তাকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করতো। তাকে একাধিকবার নিষেধ করলেও থেমে থাকেনি ঐ ছাত্রলীগ নেতা। ঐ কলেজ শিক্ষার্থী বিষয়টি পরিবারকে জানালে রায়মোহন রায়ের পরিবাবের সাথে সমাধান করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা করে। ঘটনার দিন বেলা ১১টার দিকে সমাধানের লক্ষে বসলে, রায়মোহনসহ কয়েক যুবক লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঐ শিক্ষার্থীর পরিবারকে হামলা চালিয়ে মারধর করে আহত করে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা হুমকি দিয়ে চলে যায়।
উপজেলা ছাত্রলীগের একজন যুগ্ম-সম্পাদক বলেন, কোনো অন্যায়কারীর দায়ভার সংগঠন নিবো না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে। যেকোনো ভালো কাজ এবং ছাত্রবান্ধব কর্মসূচির সাথে থাকবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কোনো অন্যায় ও সংগঠন পরিপন্থি কাজের সাথে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থাকবে না।
এই বিষষে জানতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায় রায়মোহন রায়ের ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এই বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের একজন সহ-সভাপতি বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি, মারপিটে আহত শিক্ষার্থীর চাচাতো ভাই একজন ছাত্রলীগ কর্মী, সে নিয়মিত ছাত্রলীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। বিষয়টি আমরা যথাযথভাবে জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে জানাবো।
ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সার্কেল) আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, আমরা একটি সংবাদ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।