Date: May 04, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / রংপুর / খানসামায় ঝুঁকি নিয়েই আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষকেরা - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

খানসামায় ঝুঁকি নিয়েই আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষকেরা

November 09, 2024 07:53:44 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
খানসামায় ঝুঁকি নিয়েই আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষকেরা

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের খানসামায় প্রতি বছরের মতো এবারও বাড়তি লাভের আশায় আগাম আলু চাষে ঝুঁকি নিচ্ছেন কৃষকেরা। খানসামা উপজেলার জমিতে এখনো রোপা আমন ধান কাটা-মাড়াই পুরোপুরি শেষ না হলেও সদ্য ফাঁকা হওয়া জমিগুলোতে আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। তবে এবার অতিরিক্ত উৎপাদন ব্যয়ে একপ্রকার ঝুঁকি নিয়েই আলু চাষে নামতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। গত বছর আলুর ভালো দাম পাওয়ায় আশাবাদী কৃষকেরা এবার নতুন উদ্যমে চাষাবাদে মনোযোগী হয়েছেন।

জেলাজুড়ে ডায়মন্ড, অ্যাস্টেরিক এবং কার্টিনাল জাতের আগাম আলু চাষ করা হচ্ছে। এই জাতের আলু রোপণের ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে, যা বাজারে প্রথমেই সরবরাহ করতে পারলে কৃষকেরা ভালো লাভ করতে পারেন।

তবে চলতি মৌসুমে আলুর বীজ, সার, কীটনাশক, এবং সেচের খরচ বেশ বেড়ে গেছে। জানা যায়, এবার কৃষকেরা বাইরে থেকে ৮০-৮৫ টাকায় বীজ কিনছেন, যা গত বছরের তুলনায় ২৫-৩০ টাকা বেশি। সরকারি আলুর বীজের দাম ৫৭-৬৬ টাকার মধ্যে নির্ধারণ করা হলেও সরবরাহ পর্যাপ্ত নয় বলে অধিকাংশ কৃষককে উচ্চমূল্যে বেসরকারি আলুর বীজ কিনতে হচ্ছে। গত মৌসুমে আলুর বীজের দাম যেখানে ছিল ৫০-৬০ টাকা, সেখানে এবার তা বেড়ে ৮০-৮৫ টাকায় পৌঁছেছে। অন্যদিকে, সারের বস্তাপ্রতি দামও বেড়েছে প্রায় ২০০ টাকা। আগে যেখানে বিঘাপ্রতি আলু চাষে খরচ হতো ৪০ হাজার টাকা, সেই খরচ এবার বেড়ে ৭০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে।

উপজেলার ২নং ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের কৃষক ছাইদুল ইসলাম জানান, “গত বছর আলু চাষে দ্বিগুণ খরচ হয়েছিল, আর এবার তারও বেশি। গত বছরের মতো দাম না পেলে এবার মাঠেই মরতে হবে।” একইভাবে, চেতনা শাহ পাড়ার কৃষক জিশান ইসলাম বলেন, “এক বছর আগেও ৫০ শতক জমিতে আলু চাষে খরচ হতো ৩৫-৪০ হাজার টাকা। কিন্তু এবার একই জমিতে খরচ হচ্ছে ৭৬ হাজার টাকা। আলু চাষ করে ভালো বাজারমূল্য পাবো কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।”

কৃষকেরা বলছেন, গত দুই মৌসুমে আলুর বাজারমূল্য ভালো পাওয়ার ফলে এবারও তারা চাষে উৎসাহিত হয়েছেন। তবে তারা মনে করছেন, যদি সরকার থেকে সঠিক রেটে বীজ, সার ও কীটনাশক সরবরাহ করা যেতো, তাহলে কিছুটা হলেও তাদের উৎপাদন খরচ কমত। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সরকারি বীজ না পাওয়ায় বেসরকারি পর্যায়ে বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। ফলে উচ্চমূল্যে উৎপাদন করেও সঠিক বাজারমূল্য না পেলে চাষের পুঁজি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।

অন্যদিকে, খানসামা কৃষি অফিস জানায়, আলুর ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে এবং আলুর ভালো দাম পাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার আলুর ভালো ফলন হবে বলে আশাবাদী তারা। কৃষকদের আশা, সঠিক বাজারমূল্যের মাধ্যমে তাদের উৎপাদন খরচের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।