
গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নূর আলম (২২) নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা করেছেন তার পিতা মো. আমির আলী (৪৪)। মঙ্গলবার (২১ আগস্ট) রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানায় মামলাটি রুজু করেন তিনি।
মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, মেহের আফরোজ চুমকি, রুমানা আলী টুসি, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্ল্যাহ খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা মতিউর রহমান মতিসহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় ১৩৫ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া তাদের সহযোগী হিসেবে আওয়ামী লীগের আরোও ১০০-১৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
জানা যায়, গত ২০ জুলাই সকালে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নূর আলম (২২) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনা ঘটে। তিনি কুড়িগ্রাম সদরের মোল্লাপাড়া মধ্য কুমরপুর এলাকার বাসিন্দা। নূর আলম পিতা-মাতার সাথে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তেলিপাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন।
মামলায় বলা হয়, গত ২০ জুলাই সকালে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ছয়জনের নির্দেশে বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, ছেন, চাপাতি, কোবাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের তেলিপাড়াস্থ হানিমুন রেস্টুরেন্টের সামনে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করা হয়। এক পর্যায়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজমত উল্লাহ খান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ সেখানে উপস্থিত থেকে এবং হুকুম দিয়ে অন্য আসামিদের দিয়ে ছাত্র-জনতা ওপর গুলি করান। ওই সময় তাদের ছোড়া গুলি নূর আলমের ডান চোখের ওপরের অংশ দিয়ে ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বের হয় তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর ছেলের মৃত্যুর বিষয়ে শোকাহত হয়ে এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কোনো আইনি সহায়তা নেননি তিনি। পরে বিবাদীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করতে এবং দেশের বিদ্যমান অরাজকতা পরিস্থিতির কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। বাসন থানা সূত্রে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।