
শরীয়তপুরের জাজিরায় কৃষি ব্যাংক জাজিরা শাখার ম্যানেজার আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের ম্যানেজার রবিউল ইসলাম জাকির। তবে পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধের কাজের এলাকা থেকে মাটি কেটে বিক্রি করার প্রতিবাদ করায় প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন বলে দাবি ব্যাংক কর্মকর্তার। পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তার অভিযোগ, গত ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে তিনি ও তার ড্রাইভার পদ্মাপাড়ে ঘুরতে গিয়ে দেখতে পান, পদ্মা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ এলাকার মাটি ভেকু দিয়ে কেটে ট্রাকে তোলা হচ্ছে। প্রতিবাদ জানালে তিনি বুঝানোর চেষ্টা করেন যে, এভাবে মাটি কাটলে ভবিষ্যতে বাঁধ নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং সরকারি মাটি বিক্রি করার কোনো বৈধতা নেই। পরবর্তীতে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। পরে জানতে পারেন, তার বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়েছে।
থানায় অভিযোগে ম্যানেজার রবিউল ইসলাম দাবি করেন, ব্যাংক কর্মকর্তা আনিসুর রহমানসহ স্থানীয় আরও দুজন র্যাব পরিচয়ে তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং তার ব্যাগ থেকে ৩ লাখ ৭ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। এছাড়া হ্যালমেট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করারও অভিযোগ তোলেন তিনি।
তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তীর রক্ষা বাঁধ এলাকায় ভেকু দিয়ে মাটি কেটে দুই পাশে রাখা হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি ট্রাকে মাটি নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এসব মাটি ইটভাটাসহ মাদ্রাসা ও বাড়ি ভরাটে ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্থানীয় সুজন সিকদার বলেন, ঠিকাদারের ৮-১০ লাখ মাটি প্রয়োজন, কিন্তু সেখানে প্রায় ১৬ লাখ মাটি রয়েছে। ঠিকাদার অতিরিক্ত মাটি জমির মালিকদের নিতে বলেছেন।
মাটি বিক্রির বিষয়ে ম্যানেজার রবিউল ইসলাম বলেন, "আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশনার বাইরে কাজ করি না। তাদের নির্দেশেই মাটি কাটা হয়েছে।" তবে তিনি ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে চাননি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, "আমরা মাটি বিক্রির নির্দেশ দিইনি। অতিরিক্ত মাটি সরানোর বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে।"
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায় বলেন, "মাটি কেটে বিক্রি করার বৈধতা কারো নেই। ব্যাংক কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে।"
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল আমিন বলেন, "অভিযোগ তদন্তাধীন। সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ দিলেই তা সত্যি এমন নয়।"