
সাজিদুর রহমান, কুবি প্রতিনিধি:
লালমাটির বুকে গড়ে ওঠা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় যেন প্রকৃতির অপরূপ ক্যানভাস। কুমিল্লার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত এ বিদ্যাপীঠ বছরের প্রতিটি ঋতুতে নিজস্ব এক সৌন্দর্য ধারণ করে থাকে। তবে গ্রীষ্মের শুরু, বাংলা নববর্ষের আগমনী বার্তা আর বৈশাখের প্রাণময়তায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যেন নতুন রূপে সেজে ওঠে।
চৈত্রের শেষ থেকে শুরু হওয়া রঙিন আবহ গ্রীষ্মে এসে পরিপূর্ণ রূপ পায়। গ্রীষ্মের খরতাপ যখন প্রকৃতিকে ক্লান্ত করে তোলে, তখনই ক্যাম্পাসজুড়ে জেগে ওঠে কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু, শিমুল, রক্তজবা, কাশফুল, ক্যাসিয়া জাভানিকাসহ নানা প্রজাতির ফুল। লাল, বেগুনি, সোনালি, কমলা আর সাদা রঙের সমাহারে ক্যাম্পাস যেন হয়ে ওঠে এক রঙিন স্বপ্নলোক। চোখজুড়ে যেমন প্রশান্তি, তেমনি মনে জমে ওঠে নতুন উদ্যম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি পথ, টিলা আর বনাঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব ফুল শুধু সৌন্দর্য নয়, এক গভীর ভালোবাসার অনুভূতিও জাগায়। পথচারি শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনের ক্লান্তি ভুলে যান গাছের ডালে ঝুলে থাকা সোনালুর ঝাঁকড়া ফুল দেখে, কিংবা কৃষ্ণচূড়ার লাল ছায়ায় কিছু সময় দাঁড়িয়ে।
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী অনামিকা বলেন, “কৃত্রিম সাজসজ্জা ছাড়াই প্রকৃতি নিজেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে রঙিন করে তুলেছে। এ ক্যাম্পাসের প্রকৃতিই আমাদের নবীনদের বরণ করে নেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে।”
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের একমাত্র লালমাটির ক্যাম্পাস কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৃতির সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। কৃষ্ণচূড়া রোডে হাঁটতে হাঁটতে মনে হয়, যেন নৈসর্গিক কোনো কাব্যের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি।”
এই ফুলেল সৌন্দর্য কেবল দৃশ্যমান নয়, বরং এটি এক অভিজ্ঞতা—যা শিক্ষার্থীদের মন-প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। বিকেলের মৃদু হাওয়া, শহীদ মিনারে গান আর বৈশাখের বৃষ্টিতে ভিজে হাঁটার অনুভূতি বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের স্মৃতির পাতায় রঙিন করে তোলে প্রতিটি দিন।
প্রকৃতির এই সৌন্দর্যমণ্ডিত পরিসরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, বরং জীবনের সৌন্দর্য ও প্রাণবন্ততার এক জীবন্ত পাঠশালা।