
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের জনতার বাজারে মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পশুর হাট বসানো এবং দায়িত্ব পালনরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে।
রবিবার (১ জুন) পানিউমদা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন সহকারী কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় জনতার বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গজনাইপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপকে প্রধান আসামি করে ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ আরও প্রায় ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জনতার বাজার পশুর হাটটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এবং এটি অনুমোদনবিহীন। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে এ হাট পরিচালনা করে আসছে জনতার বাজার কমিটি। জেলা প্রশাসনের একাধিক নিষেধাজ্ঞা ও সতর্কতা উপেক্ষা করে হাট বন্ধ না করে বরং সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বিআরটিএ ও জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা পত্রিকায় প্রতিবাদলিপি প্রকাশ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট, কমেন্ট ও বক্তব্য প্রচার করে এবং রাতভর হাট বসানোর ঘোষণা দিয়ে মাইকিং চালায়।
৩১ মে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে প্রায় ৭০ জন পুলিশ, আনসার ও সেনা সদস্য নিয়ে জনতার বাজারে অভিযান চালানো হয়। বিকেল ২টা ৪৫ মিনিটে হাট কমিটির সদস্যরা সংঘবদ্ধভাবে অভিযান চালানো কর্মকর্তাদের ওপর বাধা প্রদান করে, অপমানজনক ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা করে। এক ম্যাজিস্ট্রেটকে মারধরের অভিযোগও রয়েছে। পরে পুলিশের সহায়তায় ম্যাজিস্ট্রেটরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
তবে অভিযানের পরও পুরো দিন সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাজারে গরু কেনাবেচা চলতে থাকে। অভিযুক্তরা প্রশাসনের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও সরকারি দায়িত্ব পালনে সরাসরি বাধা প্রদান করে। ঘটনার পর সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, "সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা চলছে।"