
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুরে ১৩ বছর বয়সী কিশোরীকে নকল জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে বাাল্যবিয়ের রেজিষ্ট্রেশন কাবিন করার অভিযোগে এক শ্রমিকদল নেতা ও সাংবাদিক পরিচয় ধারীকে ছয়মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে বরকে ২১ দিনের কারাদণ্ড ও কিশোরী মাকে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার রাত ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আতাহার শাকিল এ দণ্ড দেন। এর আগে সন্ধ্যার দিকে পৌর এলাকার বেড়াইদেরচালা গ্ৰামে এ বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটে।
বাল্যবিবাহের দায়ে কাজী মো . আবুল কালাম আজাদকে (৪০) ভ্রাম্যমাণ আদালত ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। আবুল কালাম শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্ৰামের তাইজ উদ্দিনের ছেলে ও উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি এবং একটি পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় ধারী।ভ্রাম্যমান আদালত বিয়ের বর ফাহরুম হোসেন (২৩) কে ২১ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। তিনি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর গ্ৰামের ফারুক মিয়ার ছেলে। এ ছাড়া কনের মা ফিরোজা খাতুন (৪০)কে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
উপজেলা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য মেহেদী হাসান আশিক বলেন, কম্পিউটারের মাধ্যমে ১৩ বছর বয়সী শিশুর বয়স ১৮ বছর বানিয়ে বিয়ে দেওয়ার কাজ চলছিল। সবকিছু জানা সত্ত্বেও কাজী মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিয়ে পড়ান কাজী কালাম। তিনি অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে কম্পিউটার থেকে ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি করেন। বিষয়টি গোপন সূত্রে জানতে পেরে সেখানে আমাদেরকে পাঠান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সেখানে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হই। স্থানীয় স্কুল শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আবুল কালাম শ্রমিকদল নেতা তাই রাজনৈতিক এবং সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ছাত্রদের সাথে নানা রকম প্রভাব খাটিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। পরে আমরা ইউএনও মহোদয়কে খবর দিলে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালান। এ সময় অভিযুক্তদের উপজেলা প্রশাসনে নিয়ে যান। পরে সেখানে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের শাস্তি দিয়েছেন প্রশাসন।
শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আতাহার শাকিল বলেন, গোপনে স্কুল পড়ুয়া ১৩ বছর বয়সী শিশুকে বেআইনী ভাবে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল এমন খবর পেয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে এ ঘটনার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে এমন অভিযান নিয়মিত চলবে।