
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের পশ্চিম অসুরখাই, পূর্ব অসুরখাই ও দক্ষিণ অসুরখাই এলাকায় অবস্থিত কাছারি ঘাটের বাঁশের সাঁকোটি স্থানীয়দের জন্য অতি প্রয়োজনীয় হলেও এর অবস্থা জীর্ণশীর্ণ। এই সাঁকোটি সৈয়দপুরের কামারপুকুর এবং পার্শ্ববর্তী রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার প্রায় ১১টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের অন্যতম ভরসা।
প্রতিবছর ভারী বর্ষণ বা বন্যায় সাঁকোটি পানিতে ভেসে যায়। এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় এটি কমপক্ষে তিনবার সংস্কার করতে হয়। বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে হালকা যানবাহন ও মানুষ চলাচল করলেও দুই পারের কৃষিপণ্য ও ব্যবসায়িক পণ্য পারাপারে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। এতে পণ্য পরিবহনে খরচ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সৈয়দপুরের ৪টি ইউনিয়নের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা এই সাঁকো। তা-ও এটি নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করা হয়। এই ঘাট থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ সাঁকোটি দিয়ে যাতায়াত করে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছরে একাধিক সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ একাধিক দপ্তরে আবেদন করেও প্রতিকার পাননি এলাকার মানুষ। বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো নারী ও শিশুদের জন্য চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া সাঁকোটি পানিতে ভেসে যাওয়ার পর দুর্ভোগ চরমে ওঠে। তখন অনেকে সাঁতার কেটে বা ঘাড়ে মালামাল নিয়ে পারাপার হন। স্থানীয় বাসিন্দা তোফাইল আহমেদ জানান, "আমি প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করি। বর্ষাকালে নদীতে পানি বেশি থাকলে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করা যায় না, তখন আমাদের ১০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়।"
সাঁকোটি স্থায়ী হলে সৈয়দপুর শহরে দ্রুত যাতায়াত করা যাবে। এলাকাবাসী চান, সাঁকোটি সংস্কার না করে নদীর ওপরে একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা হোক। কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার অহিদুল ইসলাম বলেন, "বৃষ্টি হলেই এটি ভেঙে যায়, তখন যাতায়াত করতে অনেক সমস্যা হয়। নদীর অপর পাশে যারা চাষাবাদ করেন, সাঁকো না থাকলে তাদের ১০ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয়, এতে ভোগান্তি হয়। প্রায় ৫৩ বছর ধরে এখানে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের দিকে কারও নজর নেই।"
সৈয়দপুর উপজেলা প্রকৌশলী এম এম আলী রেজা রাজু বলেন, "ব্রিজটি ডিপিপিভুক্ত করার জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।" টিআইবি-২ প্রোজেক্টের কর্মকর্তা এই ব্রিজটির এলাকা পরিদর্শন করেছেন। কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল মুয়িদ আলাল বলেন, "স্বাধীনতার প্রায় ৫৩ বছরে একাধিক সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ একাধিক দপ্তরে আবেদন করেও কোনো ফলাফল পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা নিজ অর্থে সাঁকোটি তৈরি করেছি।"