
রংপুর গংগাচড়ার এক স্কুলের অনিয়ম ও মাদককারবারীদের সাথে আঁতাত করা বিটপুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করে উল্টো হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রয়াত এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। ঘটনাটি ঘটেছে গংগাচড়া মর্ণেয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বড়রূপাই এলাকায়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী কর্তার স্বাধীনতা হরণ হওয়ায় অর্থ উপার্জনে চরম বিঘ্নিত হয়ে অর্ধাহারে অতি মানবেতর জীবন যাপন করছেন নিরীহ পরিবারটি।
ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহামারী করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নোটিশ দেয় সচিবালয়। সেই জারিকৃত প্রজ্ঞাপন উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূত ভাবে মাসিক বেতনসহ বিভিন্ন খাতে টাকা আদায় করেন মর্ণেয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ। এতে প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মানিক মিয়া স্কুল কর্তৃপক্ষের অনিয়মের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিগত ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি শিক্ষা ও কল্যাণ শাখার সহকারী কমিশনার বিষয়টি আমলে নিয়ে গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে নানাভাবে ফাসানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তাদের। পুলিশ দিয়ে মাদককারবারী হিসেবে অভিযুক্ত করে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে তারা।
ভুক্তভোগী মানিক মিয়া বলেন, আমি অত্র স্কুলের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তারা আমার নামে এক বিটপুলিশ অফিসারকে হাত করে আমার পিছনে লেলিয়ে দেয় এবং এ পর্যন্ত কয়েকবার ওই এসআই আমার বাড়িতে অতর্কিত অভিযান চালিয়ে হয়রানি করে।
মানিক মিয়ার বৃদ্ধ মা সায়মা বেগম বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আমার ছেলে মানিক ষড়যন্ত্রের শিকার
হয়ে পুলিশি আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া হয়েছে। সে কোন কাজকর্ম করতে পারছে না,অনাহারে অর্ধাহারে অতি কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছি। তার নামে থানা বা আদালতে কোনো মামলা মোকদ্দমা নাই।
তিনি আরো বলেন, মানিক মিয়ার ৪ চারটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদের বাবার উপরে চাপানো মিথ্যা অপবাদ ও পুলিশের অতর্কিত অভিযান সমাজে দৃষ্টিকটু হচ্ছে। এতে তার মেয়ে গুলোর ভবিষ্যৎ চরম হুমকির মুখে পড়েছে। এই হয়রানি বন্ধে পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে মর্ণেয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার লিটু মিয়া বলেন, মানিক মিয়া একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং অতি নিরিহ ছেলে। সে ভিলেজ পলিটিক্সের শিকার, তবে হয়রানির বিষয়টি নিয়ে আমি নিজেও পুলিশের সাথে কথা বলেছি।
তবে এসব হয়রানিমূলক অভিযোগের কথা অস্বীকার করে এসআই শাহারিয়ার বলেন, আমি একবার অভিযান চালিয়েছি তবে কিছু পাইনি, আর আমরা অযথা কাউকে হয়রানি করি না, তবে তার বিরুদ্ধে মাদক কারবারের তথ্য আমাদের কাছে আছে।
এ বিষয়ে গংগাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল হোসেন বলেন, এ ঘটনা আমার জানা ছিল না, যেহেতু জানলাম বিষয়টি গুরুত্বের সহিত খতিয়ে দেখা হবে।