চুমু খাওয়াকে সাধারণত ভালোবাসার প্রকাশ হিসেবে দেখা হয়, কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা দেখাচ্ছে, এর পেছনে লুকিয়ে আছে একাধিক স্বাস্থ্যগুণও। নিয়মিত চুমু খেলে শুধু মানসিক চাপ কমে না, শরীর থেকেও অতিরিক্ত মেদ ঝরে যেতে পারে। এমনকি চুমুর সময় শরীরে নিঃসৃত ‘হ্যাপি হরমোন’ বা অক্সিটোসিন ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে এবং মনকে স্থির রাখে। ফলে ভালোবাসার মিষ্টি মুহূর্তটি এখন হতে পারে আপনার প্রাকৃতিক ফিটনেস ও রোগপ্রতিরোধের উপায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে অনেকেই ডায়েট, ব্যায়াম বা নানা ফিটনেস টিপস চেষ্টা করেন। কিন্তু গবেষণা বলছে, প্রিয়জনকে নিয়মিত চুমু খাওয়াও শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করতে পারে। চুমু খাওয়ার সময় মুখ ও ঘাড়ের প্রায় ৩০টির বেশি পেশি সক্রিয় হয়, যা ক্যালোরি পোড়াতে সহায়ক। একটানা দুই মিনিটের গভীর চুমুতে প্রায় ছয় ক্যালোরি, আর দীর্ঘক্ষণ আন্তরিক চুমুতে প্রতি মিনিটে চার থেকে ছয় ক্যালোরি পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
শুধু ওজন নিয়ন্ত্রণ নয়, চুমু দাঁতের যত্নেও উপকারী। মুখের লালা উৎপাদন বেড়ে মুখগহ্বর পরিষ্কার থাকে এবং দাঁতের ক্ষয় কমে। এছাড়া রক্তচলাচল বাড়ায়, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের গবেষক জাইয়া কিন্সবাকসহ অন্যান্য গবেষকরা জানিয়েছেন, দিনে অন্তত তিন থেকে চার বার গভীর ও আন্তরিক চুম্বন করলে শরীর ও মনে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসে। তবে চুমুর সময় মুখের পেশি সক্রিয়ভাবে কাজ করা জরুরি, যেন এর পুরো স্বাস্থ্যগত উপকার পাওয়া যায়।
চুমু শুধুমাত্র সম্পর্ককে গভীর করে না, এটি শরীর ও মনের জন্যও এক প্রাকৃতিক শক্তির উৎস। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, চুমুর আগে মুখের পরিচ্ছন্নতা ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি, নাহলে এটি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরিণত হতে পারে।
সারসংক্ষেপে বলা যায়, ভালোবাসার মিষ্টি প্রকাশ চুমু একদিকে যেমন সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করে, অন্যদিকে এটি হতে পারে প্রাকৃতিক ফিটনেস, মানসিক প্রশান্তি এবং রোগপ্রতিরোধের এক শক্তিশালী উপায়।
তথ্যসূত্র: দ্য অ্যামেরিকান জার্নাল অফ মেডিসিন