
রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহীর চারঘাটে পত্রিকা বিক্রিকালে দৈনিক দেশেরপত্রের তিনজন বিক্রয় প্রতিনিধির উপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ হামলায় মো. নূর নবী হযরত ও রাজন আলী নামে দুই জন গুরুতর আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের আঘাতে নূর নবীর হাতের একটি হাড় ভেঙে গিয়েছে এবং রাজন আলীর মাথায় গুরুতর রক্তাক্ত জখম সৃষ্টি হয়েছে। তারা চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৮ জুন ২০২৪) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার রাওথা কলেজের সামনে হাজির ঢালান এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের সদস্য। এ ঘটনায় চারঘাট থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সকালে সাড়ে নয়টায় উল্লিখিত এলাকায় পত্রিকা বিক্রিকালে স্থানীয় এক দোকানদারের সাথে কথা কাটাকাটি হয় দেশেরপত্রের বিক্রয় প্রতিনিধিদের। পরে পত্রিকা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে সামনে এগিয়ে গেলে ঐ দোকানদার ফোন করে এলাকার সন্ত্রাসী বখাটে চারভাইকে জড়ো করে বিক্রয় প্রতিনিধিদের উপর হামলা করতে উসকে দেয়। পরে চার ভাই মিলে দুটি মোটরসাইকেলে করে দেশেরপত্রের বিক্রয় প্রতিনিধিদের পিছু নেয় এবং লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আক্রমণকারীরা মোটরসাইকেল চলমান অবস্থাতেই পেছন থেকে হামলা চালায় এবং দ্রুত সেখান থেকে সটকে পরে। এ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
হামলাকারীরা হচ্ছে- মঞ্জুর, মমিন, মেজান ও সেজান। তারা সবাই স্থানীয় কাকড়ামারি বাজার এলাকার নাসির উদ্দিনের ছেলে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন আহত বিক্রয়কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজশাহী বিভাগ হেযবুত তওহীদের বিভাগীয় আমির আশিক মাহমুদ। তিনি এই ঘটনার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চারঘাট মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। চারঘাট উপজেলা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ এ এস এম সিদ্দিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।
বাংলাদেশ সাংবাদিক জোটের সাধারণ সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা বলেন, পত্রিকার বিক্রয় প্রতিনিধিদের উপর হামলার ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও আমরা এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। হামলা পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করলে হামলাকারীরা তাদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইছে, মুচলেকা দিচ্ছে। কিন্তু এসব ঘটনা ঘটানোর পেছনের মূল খলনায়করা অধরাই থেকে যাচ্ছে, বলেন এই সাংবাদিক নেতা।
তিনি বলেন, দেশেরপত্র পত্রিকাটি একটি আদর্শিক পত্রিকা। পত্রিকাটি জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, উগ্রতা, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। একটি ধর্মান্ধ, উগ্রবাদী, জঙ্গিভাবাপন্ন, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী সাধারণ মানুষকে এই পত্রিকার ব্যাপারে উস্কে দিয়ে প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে।