
শিবপুর প্রতিনিধি, নরসিংদী:
শিবপুরে হারুন অর রশীদ খানকে হত্যাচেষ্টার মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় ইটাখোলা গোলচত্বরে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শামসুল আলম ভূঁইয়া রাখিলের সঞ্চালনায় ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. মুহসীন হোসেন নাজিরের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান। ঢাকা হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে প্রতিবাদ সভাস্থলে আসেন তিনি।
এরআগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হারুনুর রশীদ খানকে তার বাসায় ঢুকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা।
হারুন অর রশীদ খান বলেন, আমরা শিবপুরে কোন সন্ত্রাসের, হত্যাকাণ্ডের রাজনীতি করি না। জনগণের জন্য রাজনীতি করি। মানুষের কল্যাণে কাজ করি। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে আমার নিজ বাসায় ঢুকে সন্ত্রাসীরা আমাকে গুলিবিদ্ধ করেছে যারা করেছে তারা কাদের ক্ষমতায় করেছে, তা শিবপুরবাসী আপনারা জানেন। যারা এই হত্যার চেষ্টা সাথে সম্পৃক্ত ও যারা অস্ত্র দিয়ে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছে তাদেরকে প্রশাসন চিহ্নিত করেছে। সেই মদতদাতা আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এই মামলাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্রে যারা লিপ্ত তাদের ব্যাপারে প্রশাসন তদন্ত করে দেখবেন এবং যারা আওয়ামী লীগের পরিচয় দিয়ে যাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সন্ত্রাসী বেড়ে উঠছে তারা হলেন শিবপুরের এমপি আলহাজ্ব জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহনের ছোট ভাই জুনায়েদ ভূঁইয়া জুনু ও শিবপুর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ তাদের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসীসহ শিবপুরে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এ বিষয়ে শিবপুরবাসী ও শিবপুর তথা নরসিংদীর প্রশাসন সচেতন থাকবেন।
অ্যাম্বুলেন্সে হুইল চেয়ারে বসে কান্না জড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলেন শিবপুরের সাবেক আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশিদ খান।
হারুনুর রশিদ খান আরও বলেন, একজন সংসদ সদস্য হয়েও আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকার পরও আমার এই মামলাকে অন্য খাতে প্রভাবিত করার জন্য এমপি সাহেবের ব্যক্তিগত অফিসে অগ্নিসংযোগ মামলায় তাদেরকে আসামি করেছে। যারা সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সভা সমাবেশ করছেন তাদের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে হয়রানি করতেছে। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি অযথা কোনো নির্দোষ মানুষকে হয়রানি করবেন না। যারা প্রকৃত দোষী তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
প্রতিবাদ সভা ও দোয়া মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন শিবপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম মোল্লা। তিনি হারুনুর রশিদ খানের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনে ছুটে যান হাসপাতালে ভর্তি থেকে শুরু করে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখেন চেয়ারম্যানের চিকিৎসার।
তিনি তার বক্তব্য বলেন, শিবপুরবাসী আজ বর্তমান এমপি জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহনের আতঙ্কে আছেন এই মোহন কাকে কখন কিভাবে বিপদে ফালান সেই ভয়ে, এই মোহনের ষড়যন্ত্র থেকে বাঁচতে সর্বদা সজাগ ও সচেতন এবং ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান করেন।
প্রতিবাদ সবাই আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ভূঁইয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মাহফুজুল হক টিপু, আইয়ুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান সরকার বাঘাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ সরকারসহ জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পর্যায়ের সকল আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও হাজার হাজার সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবাদ সভায় এই চিহ্নিত সন্ত্রাসী গডফাদারদের দল থেকে বহিষ্কার এবং সন্ত্রাসীদের অস্ত্র সরবরাহকারী সহযোগীদের ফাঁসির দাবি করেন।