Date: October 26, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / আবহাওয়া / সিভিয়ার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মন্থা - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

সিভিয়ার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মন্থা

October 26, 2025 11:03:29 AM   অনলাইন ডেস্ক
সিভিয়ার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মন্থা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ক্রমে ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে, যা খুব শিগগিরই ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সবশেষ তথ্যমতে, আগামী ২৭ অক্টোবর সকালে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘মন্থা’, যা থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম। স্থানীয় ভাষায় ‘মন্থা’ অর্থ ‘সুগন্ধি ফুল’ বা ‘সুন্দর ফুল’। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঘূর্ণিঝড় মন্থা শক্তিশালী হয়ে ‘সিভিয়ার সাইক্লোন’ অর্থাৎ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যা ৬টার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে প্রায় ১৩৩০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ১২৫৫ কিলোমিটার, মোংলা থেকে ১৩০৫ কিলোমিটার এবং পায়রা থেকে প্রায় ১২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং এর কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বেগে পৌঁছাতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানিয়েছেন, বর্তমান তথ্য অনুযায়ী ২৭ অক্টোবর সকালে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে এর গতিপথ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মডেল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ২৮ বা ২৯ অক্টোবরের মধ্যে এটি ভারতের অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করতে পারে। যদিও বাংলাদেশে এর সরাসরি প্রভাব পড়ার আশঙ্কা কম, তবুও এর কারণে দেশের আবহাওয়ায় কিছু পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।

২৮ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগে তুলনামূলকভাবে কম বৃষ্টি হতে পারে, চট্টগ্রাম ও সিলেটেও বৃষ্টির পরিমাণ সীমিত থাকবে। তবে রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, শনিবার মধ্যরাত নাগাদ নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে এবং ২৬ অক্টোবর দুপুরের দিকে ঘূর্ণিঝড় মন্থায় পরিণত হতে পারে। যদিও তার মতে, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বাংলাদেশে খুব বেশি পড়বে না।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) ২০০৪ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের প্রথা চালু করেছে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে গঠিত WMO/ESCAP প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস নামের আঞ্চলিক কমিটি এই নাম নির্ধারণ করে। কমিটিতে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, ইয়েমেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। তাদের প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকেই প্রতিটি নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্বাচন করা হয়।

সব মিলিয়ে বলা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’তে রূপ নিলে এটি একটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে, যার গতিপথ ও প্রভাব আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।