
চিলাহাটি প্রতিনিধি, নীলফামারী:
উত্তর জনপথের নীলফামারী জেলার চিলাহাটি স্থলবন্দর হবে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও লাভজনক। এই স্থলবন্দর দিয়ে ভারত নেপাল ও ভুটান বাণিজ্যিক সুবিধা অর্জন করা যাবে। বদলে যাবে এলাকার আত্ম সামাজিক চিত্র। দেশ স্বাধীনের পর থেকেই উত্তর জনপথের মানুষের প্রাণের দাবি বন্ধুত্বকৃত এই রেলপথটি পুনরায় চালু করা হোক।
অবহেলিত এই জনপথের মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে চিলাহাটি স্থলবন্দরের গেজেট প্রকাশিত হয়। গেজেট প্রকাশের ১০ বছর পর সরকার সার্বিক দিক বিবেচনা করে ব্রিটিশ আমলের বন্ধ কৃত রেলপথটি পুনরায় চালু করছে। দীর্ঘদিন পর বন্ধ কৃত রেলপথ চালু করায় চিলাহাটিসহ গোটা উত্তর জনপথের মানুষ উল্লাসিত হয়ে পড়ে। পুনরায় চালুকৃত এই রেলপথ দিয়ে ইতিমধ্যে ঢাকা নিউ জলপাইগুড়ি মিতালী এক্সপ্রেসসহ মালবাহী ট্রেন নিয়মিত চলাচল শুরু করেছে।
জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে দেশ-বিদেশ খ্যাত ছিল নীলফামারী জেলার চিলাহাটি নাম। সে সময় চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথে শুল্ক স্টেশন ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট চালু ছিল। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যায় চিলাহাটি হলদিবাড়ি রেলপথ। তবে চিলাহাটি হলদিবাড়ি পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতাযাত চালু ছিল। ২০০২ সালে চেকপোস্টটি বন্ধ হওয়ায় পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতাযাত বন্ধ হয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন পর চিলাহাটিকে আন্তর্জাতিক রেলস্টেশন গড়ে তোলার লক্ষ্যে নির্মাণ করা হচ্ছে আইকনিক ভবন, তৈরি করা হয়েছে চিলাহাটি হলদিবাড়ি রেলপথ সংযোগসহ অন্য অবকাঠামো। এরই মধ্যে আইকনিক ভবন নির্মাণের কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। নতুন ভাবে সাজানো হয়েছে দুইটি প্ল্যাটফর্ম ওভারব্রিজ নির্মাণের কাজ শেষের দিকে। যা পণ্য ওঠা নামাসহ যাত্রীরা অন্য স্থলবন্দরের চেয়ে অনেক সুবিধা ভোগ করতে পারবে। বাণিজ্যিক দিক দিয়ে লাভবান হবে উভয় দেশ। শিলাহাটিতে বাণিজ্যিক সুবিধার দিক দিয়ে সকল অবকাঠামো বিদ্যমান। এখানে রয়েছে দুইটি বাণিজ্যিক ব্যাংক সরকারি খাদ্য গুদাম পুলিশ চেকপোস্ট। যোগাযোগের ক্ষেত্রে চিলাহাটি থেকে রেলপথে সরাসরি ঢাকা খুলনা রাজশাহী দুইটি করে আন্তঃনগর ট্রেন চালু আছে। এছাড়া চিলাহাটির উপর দিয়ে মহাসড়কের কাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি থাকা অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধা বাড়বে। এছাড়া সার্কভুক্ত ভুটান, নেপাল আর চীনের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে যোগ হবে নতুন এক মাত্রা। ঘুচবে বেকারত্ব। রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির ফলে দেশ হবে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। এতে দ্রুত পাল্টে যাবে উত্তরাঞ্চলের চিত্র। তবে এত সুযোগ-সুবিধা ও ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও গেজেট হওয়ার পরও কেন চালু হচ্ছে না স্থলবন্দরটি প্রশ্ন স্থানীয়দের। নীলফামারী জেলার উন্নয়নে দ্রুত চিলাহাটি স্থলবন্দর বাস্তবায়ন, ইমিগ্রেশন কেন্দ্র ও উত্তরা ইপিজেডে কন্টেনার ডিপো স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।