
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় বিএনপি আমলে নির্মিত আবাসন বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সংস্কার না করায় বাসিন্দাদের দুর্বিষহ জীবন কাটছে। ২১ বছর আগে নির্মিত এই টিনসেট আবাসনের সবগুলো ঘরই নষ্ট হয়ে গেছে, চালসহ বেড়া ভেঙে পড়েছে। বাসিন্দারা জানান, আবাসনের ১৮০টি পরিবারের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
জানা যায়, ২০০৪ সালে ফুলবাড়ী উপজেলা শহর থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে চন্দ্রখানা বালাটারি এলাকায় আশ্রয়হীন ১৮০ পরিবারের জন্য সাড়ে ৬ একর জমিতে আবাসনের ঘর তৈরি করেছিল বিএনপি সরকার। তবে সময়ের সাথে সাথে ঘরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকার ঘরগুলোর মেরামত করেনি।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনকে বারবার জানানো হলেও আবাসনের ঘর মেরামত করা হয়নি। ফলে, ঘরের চাল ও বেড়া নষ্ট হয়ে গিয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেক বাসিন্দা ঘর ফেলে চলে গেছেন। নদী ভাঙনে আশ্রয়হীন পরিবারগুলো এখানে বাস করলেও বর্ষাকালে বৃষ্টি ও শীত থেকে বাঁচতে তারা ভাঙা চালে পলিথিন দিয়ে জীবনযাপন করছেন।
এ ব্যাপারে বাসিন্দারা জানান, তারা বারবার জনপ্রতিনিধি এবং উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন, কিন্তু কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। তারা অভিযোগ করেন, বিএনপি সরকারের আবাসন হওয়ায় তা মেরামত করা হয়নি। ২০০৪ সালে নির্মিত এই আবাসনে প্রতিটি পরিবারকে সাড়ে চার শতক জমি সহ ঘর দেয়া হয়েছিল।
বালাটারি আবাসনের বাসিন্দা ময়না বালা বলেন, “এই আবাসনে খুব কষ্টে আছি বাবা। ঘরের চাল অনেক আগে নষ্ট হয়ে গেছে, কেউ দেখতেও আসেনি। শুনছি আবাসনটা বিএনপি করেছে, দেখছি হাসিনা সরকার ভালো করে দেয়নি। বৃষ্টির দিনে বৃষ্টি, আর শীতকালে শীত। পলিথিন দিয়ে জোড়াতালি দিয়েও কাজ হয় না। আমাদের যাওয়ার মতো জায়গা নাই, খুব কষ্টে এখানে পড়ে আছি। ঘরগুলো একটু ভালো করে দিলে, খাই না খাই শান্তিতে থাকতে পারতাম।”
আরেক বাসিন্দা রহিম মিয়া বলেন, “আমরা তো দিনকে দিন খাই। ঘর মেরামত করার মতো সামর্থ্য নেই। এই সরকার যদি আবাসনের ঘরগুলো ভালো করে দিতো, অন্তত সারাদিন কামলা খেটে রাতে একটু ভালো করে থাকতে পারতাম।”
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, “উপজেলার বালাটারি এলাকার আবাসনসহ একাধিক আবাসনের জরাজীর্ণতার বিষয়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হবে।”