
জেলা প্রতিনিধি, নরসিংদী:
নরসিংদী জেলা কারাগারে কারারক্ষীর গাফিলতিতে এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নিহতের স্বজনরা। নিহত কয়েদি সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে রুকন মিয়া (৩৫)। মঙ্গলবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় একদিকে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে কয়েদি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে, অন্যদিকে জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দাবি করছেন, মৃত অবস্থায় কয়েদিকে গ্রহণ করা হয়। এ নিয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে নানা কৌতূহল ও ধোঁয়াশা।
নিহতের ভাই রুবেল জানান, রুকন একেবারে সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল, তার শুধুমাত্র ডায়াবেটিসের সমস্যা ছিল। শারীরিকভাবে অন্য কোনো সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ মৃত্যুতে কারা কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। রুবেলের অভিযোগ, জেল পুলিশ রুকনকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, “আমার ভাই অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জেলা হাসপাতালে আনা হলেও আমাদের পরিবারকে কিছুই জানানো হয়নি। পরে আজ বুধবার সকালে অন্যান্য মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার ভাই মৃত। বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।”
এই ঘটনায় নরসিংদী জুড়ে তৈরি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। কারাগারের ভেতরে একজন কয়েদির মৃত্যু এবং জেল সুপার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য ও ধোঁয়াশা।
জেল সুপার মো. শামীম জানান, মাদক মামলার আসামি হিসেবে রুকন মিয়া কারাগারে বন্দি ছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে অন্যান্য কয়েদিদের মাধ্যমে বিষয়টি জানা যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নরসিংদী জেলা ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, রুকন শারীরিক অসুস্থতার কারণে মারা গেছেন। তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।”
জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার পর কারাগার থেকে এক বন্দিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক রুকন মিয়াকে মৃত হিসেবে গ্রহণ করেন। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না এবং ধারণা করা হচ্ছে, হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়ায় সে মারা যায়। রুকনের ডায়াবেটিস ছিল বলেও জানান তিনি।
নিহতের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।