
দুমকি সংবাদদাতা, পটুয়াখালী:
দিন দিন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে গো-খাদ্যের দামও বৃদ্ধি পাওয়ায় সহজ পদ্ধতিতে, স্বল্প খরচে ও স্বল্প শ্রমে উন্নত জাতের ঘাস চাষে ঝুঁকছেন দুমকির খামারিরা। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে চারণভূমি কমে গেলে কাঁচা ঘাসের সংকট মোকাবিলায় এ ঘাসের বিকল্প নেই। ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ ঘাসের চাহিদা দুমকি অঞ্চলে দিনদিন বাড়ছে।
উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, পতিত জমিতে নেপিয়ার, জার্মান, জাম্বু সহ বিভিন্ন ঘাস নিয়ে কৃষকদের কর্মব্যস্ততা। নির্ধারিত সময়ে জমি থেকে ঘাস কেটে কেউ কাঁধে করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। এ সকল ঘাসের চারা একবার লাগালে ৩/৪ বছরের মধ্যে নতুন করে আর লাগানো লাগে না। উওর রাজাখালী গ্রামের মো.হাবিব শরীফ, মো. রিপন শরীফ(লিপু); আজিজুল খান, হেম লাল মিস্ত্রি , আঃ মন্নান শিকদার, ফারুক হোসেন সহ কয়েকজন কৃষক জানান, মাঝে-মাঝে ক্ষেতের ভেতরে জন্মানো আগাছা পরিষ্কার করতে হয় এবং সময়মত সার প্রয়োগ করতে হয়। তারা আরও জানান, নিজেদের গবাদি পশুর খাদ্যের চাহিদা মেটাতেই একে অন্যের কাছ থেকে উৎসাহিত হয়ে এই ঘাস চাষ শুরু করেন তারা।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে জানা যায়, অত্র উপজেলায় দেশী-বিদেশী মিলে প্রায় সাড়ে ৪ শত গরুর খামার রয়েছে। তাই অনেক চাষিই এখন বিভিন্ন জাতের ঘাস বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হচ্ছেন।
তারা মনে করেন, দেশে গরুর খামার করে অনেক উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে ধীরে ধীরে চাষের জমি কমে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে ঘাসের উৎপাদনও অনেক কমে গেছে। এই প্রেক্ষাপটেই বাণিজ্যিকভাবে ঘাসের চাষাবাদ ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আশু একটি বিপণন কেন্দ্র ও প্রক্রিয়াজাত করার লক্ষ্যে একটি গুদাম স্থাপন দরকার।
উত্তর রাজাখালি গ্রামের খামারি হাবিব শরীফ জানান, ৩-৪ টি গরু সারা বছর লালন পালন করে থাকি। দিন দিন গো খাদ্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে বাধ্য হয়ে ঘাস চাষ করছি। এতে বিগত বছরের মতো দানাদার ও খড়ের ওপর তেমন নির্ভর করতে হয় না।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি মেহের মালিকা কর্মকর্তা বলেন, কাঁচা ঘাস খেলে গরু দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। অল্প দিনে গরু সুঠাম দেহের অধিকারী হয়।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মসিউর রহমান বলেন, খামারের উন্নতির লক্ষে কাঁচা ঘাসের কোন বিকল্প নেই। সে লক্ষে প্রান্তিক খামারীদের উদ্বুদ্ধকরণসহ উপজেলা প্রাণিসম্পদ চত্ত্বর থেকে উন্নত জাতের ঘাসের কাটিং সরবরাহ করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, খামারিদের যে কোন সমস্যা নিরসনে সার্বিক দিকনির্দেশনা দিয়ে উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস কাজ করে যাচ্ছে।