
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুরে মাওনা চৌরাস্তায় লাইফ কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর পরই হাসপাতালের মালিকপক্ষ, চিকিৎসক ও নার্স পালিয়ে যায়।
রবিবার(৩১ মার্চ) রাত ৯ টার দিকে মাওনা চৌরাস্তায় লাইফ কেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। পরে এই ঘটনায় উত্তেজিত জনতা ও নিহতের স্বজনেরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। রাত ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শোভন রাংসা হাসপাতালে এসে তদন্ত কমিটি ঘোষণা ও দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
নিহত ইয়াসমিন আক্তার গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা গ্রামের আসাদুজ্জামানের স্ত্রী ও ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার পাচবাগ ইউনিয়নের নলচিরা গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে।
নিহতের স্বামী আসাদুজ্জামান বলেন, আমার অন্ততসত্তা স্ত্রীকে স্বাস্থ্য পরিক্ষা করার জন্য (৩১ মার্চ ) রবিবার বিকেল ৩টার দিকে মাওনা চৌরাস্তায় লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি আল্ট্রা-করায়।পরে সাথে সাথেই তাকে সিজার করতে বলে।আমরা তাদের কথামতো সিজার করাতে রাজি হই। ইফতারের পর সিজার হবে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে সিজারের কালে তাকে কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে পূর্ণ চিকিৎসা না দিয়ে বিকাল ৪টার দিকে প্রসুতির সিজারের ব্যবস্তা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।বিকাল ৪ টার দিকে ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন আমার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার। সিজারের পর রোগীকে পর্যবেক্ষণ রুমে রাখা হয়, কাছে গিয়ে দেখি প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।তাদেরকে বার বার বলার পরেও সেখানে তাকে ঠিক মতো ট্রিটমেন্ট দেয়া হয়নি। রাত পৌনে ৯ টার দিকে ইয়াসমিনের মৃত্যু হয়। বিষয়টি আমাদের বুঝতে না দিয়ে তড়িঘড়ি করে রোগীর অবস্থা খারাপ জানিয়ে রোগীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাবে বলে একটি এ্যাম্বুলেন্সে রেখে পালিয়ে যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা বলেন, এ ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও প্রশাসনের কর্মকর্তার সমন্বয়ে ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি হাসপাতালের বিষয়ে জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।