Date: April 30, 2024

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / ঝগড়ার মধ্যেই মৃত্যু, পরিবারের অভিযোগ হত্যা - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

ঝগড়ার মধ্যেই মৃত্যু, পরিবারের অভিযোগ হত্যা

April 16, 2024 10:44:14 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
ঝগড়ার মধ্যেই মৃত্যু, পরিবারের অভিযোগ হত্যা

শরীয়তপুর (জাজিরা) প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের জাজিরায় জমির সীমানা নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি চলার এক পর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে হালিমুন বেগম (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ মহিলার মৃত্যু হয়েছে। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার।

মঙ্গলবার (১৬-এপ্রিল) সকাল আনুমানিক সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার বড় গোপালপুর ইউনিয়নের খান কান্দি (১-নং) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত হালিমুন ঐ এলাকার আদম আলী ঢালীর স্ত্রী।

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে লুতফর ঢালী বাদী হয়ে ১৯'জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫'জনকে আসামি করে, জাজিরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিহত হালিমুনদের সাথে বাড়ির জমির সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো প্রতিবেশী নুর ইসলাম ঢালীদের সাথে। এরিমধ্যে নিহত হালিমুনের বিল্ডিংয়ের দেয়ালে আস্তরের কাজের জন্য নুর ইসলাম ঢালীর জমিতে বাঁশের খুটি গাড়ে। যা নিয়ে ঘটনার আগের দিনও মারামারি হয়েছে। ওইদিন নিহত হালিমুনের হাতে বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করে নুর ইসলাম ঢালীরা। পরদিন সকালে একই ঘটনা নিয়ে আবারও ঝগড়াঝাটির ঘটনা ঘটে। এসময় হটাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মৃত্যু হয় হালিমুনের।

নিহতের ছেলে লুতফর ঢালী অভিযোগ করে বলোন, আমার মাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার হাতে এবং মাথায় আঘাত করা হয়েছিলো। তবে আগেরদিন সকালে তার মায়ের সাথে ঝগড়া বা মারামারি হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না।

এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত নুরুল হক ঢালীর স্ত্রী মুনিরা (৩৫) জানান, তাদের সঙ্গে বাঁশ গাড়া নিয়ে ঝগড়া হয়েছে। তবে কেউ কাউকে আঘাত করেনি। সে এমনিই পড়ে স্টক করে মারা গেছে বলেও দাবী তার।

ঘটনার পত্যক্ষদর্শী মোস্তফা ঢালীর স্ত্রী উজালা বেগম (৪৯) দৈনিক দেশের পত্রকে জানান, সকালে ঘুমন্ত অবস্থায় তিনি উঠে দেখেন চিল্লাচিল্লি হচ্ছে। তিনি সামনে এগিয়ে দেখেন দেখেন হালিমুন ও তার প্রতিবেশী নুরুল হক ঢালী, নুরুল ইসলাম ঢালী, ইউসুফ ঢালীসহ তাদের বাড়িতে থাকা আরও কয়েকজন গালিগালাজ ও ঝগড়াঝাঁটি করতেছে। বিষয়টি তিনি থামানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু হটাৎ করেই নুরুল হক বড় একটি ধারালো ছেন নিয়ে আসেন। এসময় তিনি নিহত হালিমুন ও তার স্বামীকে জবাই করতে চান। এসময় ইউসুফ ঢালী অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন হালিমুন ও তার স্বামীকে।

এক পর্যায়ে নিহত হালিমুনকে মারতে এগিয়ে এলে উপস্থিত উজালাসহ তার সঙ্গে থাকা ইদ্রিস ঢালীর স্ত্রী মাকসুদা (৩৫) হালিমুনকে জড়াজড়ি করে পিছিয়ে আনা ধরেন। এসময় হটাৎ পড়ে গিয়ে অসুস্থ হন হালিমুন। পরে ঘরে নিয়ে শুইয়ে দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মাকসুদা বলেন, নিহত হালিমুন আমার চাচী শাশুড়ী হন। প্রতিবেশী নুরুল হকের সীমানায় বাঁশের খুটি গাড়াকে কেন্দ্র করে সকালে ঝগড়া হয়। এসময় নুরুল হকসহ তার পরিবারের সদস্যরা লাঠি ছেন নিয়ে মারামারি করতে বের হন। এসময় পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় হালিমুনের। তবে মাকসুদার দাবী বাড়ি ও কিল-ঘুষি মারা হয়েছে হালিমুনকে। একই কারণে আগেরদিন সকালে লাঠি দিয়ে হালিমুনের হাতে আঘাত করা হয়েছিলো বলেও জানান মাকসুদা।

এবিষয়ে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ মাহমুদুল হাসান মুঠোফোনে দৈনিক দেশের পত্রকে জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই বলতে পারবেন মৃত্যুর কারণ। তবে তারা নিহতের শরীরে আঘাতের চিন্হ পাননি।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হাফিজুর রহমান জানান, ঘটনাটি শোনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। লাশ পোস্টমর্টেমের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এজাহার পেয়েছি। মামলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।