
সুজন বিশ্বাস, শৈলকূপা সংবাদদাতা:
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে এন্টিভেনাম মজুদ থেকেও অবহেলায় সাপে কাটা পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর করুন মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত লিলি হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাচারীতোলা গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে।
জানা যায়, গত শনিবার দিনগত রাতে লিলি খাতুনকে সাপে কাটে। রাতেই তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জরুরি বিভাগ থেকে তাকে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠান।
রোস্টার ডিউটির তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার দিন রাতে ডিউটিতে ছিলেন ডা. রাজিব। ব্যবস্থাপত্রে এন্টিভেনাম ইনজেকশন দেওয়ার কোন নির্দেশনা না থাকায় ডিউটি নার্স এন্টিভেনাম দিতে পারেনি। ফলে মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে কুষ্টিয়া হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
লিলির ভাই আব্দুল আজিজ অভিযোগ করেন, বার বার এন্টিভেনাম ইনজেকশন দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও নার্স ডাক্তারের অনুমতি না থাকায় দেননি। ফলে কুষ্টিয়া হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই মারা যায় লিলি। চোখের সামনে বোনের মৃত্যু যন্ত্রনা সহ্য করতে হয়। এ ঘটনায় তার স্বজনরা ক্ষুদ্ধ হন। বিষয়টি হাসপাতালের তত্বাবধায়ককে জানানো হলেও কোন কর্ণপাত করে নি বলে রোগীর স্বজনরা জানান।
ঘটনার দিন রাতে মেডিসিন ওয়ার্ডে ডিউটিরত একাধিক নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডিউটিরত ডাক্তার ব্যবস্থাপত্রে এন্টিভেনাম উল্লেখ করেনি। যে কারণে লিলিকে ইনজেকশন পুশ করা সম্ভব হয়নি।
এ নিয়ে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জাকির হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম রিপন তাদের বকাঝকা করেছেন বলেও ওই নার্সরা উল্লেখ করেন। এন্টিভেনাম মজুদ থাকার পরও কেন সাপে কাটা রোগীকে দেওয়া হলো না বিষয়টি জানতে ঘটনার দিন রাতে ডিউটিরত চিকিৎসক ডা. রাজিবের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে সোমবার বিকালে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি। ফোন ধরেননি তত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলামও।
অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালে যোগদানকৃত চিকিৎসকরা বেশির ভাগই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ছোড়াকাটা রোগী ছাড়া তাদের ভারি চিকিৎসা দেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই বল্লেই চলে। তাছাড়া রাতে একজন মুমুর্ষ রোগীর জন্য কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওয়া দুস্কর বলেও ভুক্তভোগী রোগীরা অভিযোগ করেন।