


দেশে ৬ কোটির বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি জানায়, দীর্ঘদিন ধরে চলমান মূল্যস্ফীতি এবং সংকুচিত শ্রমবাজারের প্রভাব আগামী বছর আরও প্রকট হতে পারে। ফলে ২০২৫ সালে দারিদ্র্যের হার বেড়ে ২১ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশে দারিদ্র্য ও বৈষম্য বিশ্লেষণ: সমৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক নতুন প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে যে, স্বাস্থ্যঝুঁকি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা যে কোনো ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের অভিঘাতে দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ—প্রায় ৬ কোটি ২০ লাখ—দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ার বাস্তব হুমকির মুখে রয়েছে।
রাজধানীর গুলশানে প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের বিশ্বব্যাংক পরিচালক ড. সেবাস্টেন একার্ড বলেন, উৎপাদনশীল খাতে কর্মসংস্থানের স্থবিরতা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে নারী ও তরুণদের। শহরাঞ্চলে দারিদ্র্য হ্রাসের অগ্রগতি থাকলেও গ্রামাঞ্চলে সেই প্রবণতা ধীরগতির।
সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান মত দেন যে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গতিপূর্ণ হারে কর্মসংস্থান বাড়েনি, যা দারিদ্র্য কমার পথে প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আলোচকরা আরও জানান, ২০১০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ৩১ শতাংশ থেকে কমে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এলেও ২০১৬ সালের পর দারিদ্র্য কমার গতি উল্লেখযোগ্যভাবে শ্লথ হয়েছে। একই সময়ে চরম দারিদ্র্যের হারও কমে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামলেও সামগ্রিক অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান মন্তব্য করেন, গণতন্ত্র ও জবাবদিহির ঘাটতি দারিদ্র্য কমানোর গতি কমিয়ে দিয়েছে। তাঁর মতে, দেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক কাঠামোর দুর্বলতাগুলো দূর না করা পর্যন্ত দারিদ্র্য হ্রাসে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসবে না।