নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া এলাকায় হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে উগ্রবাদী গোষ্ঠীর উসকানিমূলক প্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেযবুত তওহীদের রাজশহী বিভাগীয় সভাপতি মো. মশিউর রহমান। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিতে পরিকল্পিতভাবে হেযবুত তওহীদকে নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার করে মব সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে শনিবার সকাল ১০টায় স্থানীয় কিছু উগ্রবাদী গোষ্ঠী ‘ইমাম কল্যাণ ঐক্য পরিষদ ও ওলামা-মাশায়েখগণ’ এর ব্যানারে বনপাড়া বাজারে এক বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। পরে একটি সমাবেশে হেযবুত তওহীদের অফিস গুড়িয়ে দেওয়া, সদস্যদের হত্যা করার হুমকি প্রদান করা হয়। এছাড়াও হেযবুত তওহীদ ইসলামের শত্রু, নামাজ পড়েনা, নেশা করে, তারা কাফের, বেঈমান, তারা ইসলামকে ধংস করার পায়তারা করছে ইত্যাদি উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে।
এসময় বক্তব্য রাখেন বড়াইগ্রাম উপজেলা বিএডিসির চেয়ারম্যান মো. জামাল আলি, বনপাড়া পৌর বিএনপি’র সাবেক সেক্রেটারি সর্দার রফিকুল ইসলাম, বনপাড়া পৌর জামাতের আমির মো. মহিউদ্দিন, বড়াইগ্রাম উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মো. ওমর ফারুক, উপজেলা ইমাম ঐক্য পরিষদের সভাপতি জনাব মাওলানা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।
মিথ্যা ও উসকানিমূলক তথ্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মশিউর রহমান বলেন, “আমরা যা বলি না, করি না, সেসব বিষয় আমাদের নামে ছড়িয়ে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সময়োপযোগী পদক্ষেপের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা আলেম সমাজকে আহ্বান জানাই- তারা যেন বিভ্রান্তিকর গুজব না ছড়ান এবং হেযবুত তওহীদের প্রকৃত আকিদা যাচাই করেন। ইসলামে মিথ্যা প্রচার হারাম এবং দেশের প্রচলিত আইনেও তা দণ্ডনীয় অপরাধ।”
তিনি আরও বলেন, উগ্রবাদীদের ছাপানো হ্যান্ডবিলে হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে মিথ্যা, উসকানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করা হয়েছে। হ্যান্ডবিলটিতে দাবি করা হয়েছে- হেযবুত তওহীদ মহিলা ইমাম নিযুক্ত করে এবং মহিলাদের পেছনে পুরুষেরা নামাজ পড়ে। অথচ এই তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইতোমধ্যে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বক্তারা জানান, যার উপর ভিত্তি করে এমন দাবি করা হচ্ছে, সেই ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, বরং ভারতের কেরালা রাজ্যের একটি ভিডিও।
তিনি বলেন, হ্যান্ডবিলে ইসলামের মৌলিক বিষয়- কালেমা বা তওহীদ সম্পর্কে হেযবুত তওহীদের বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ২০০৮ সালে সংগঠনের পক্ষ থেকে আল্লাহর মোজেজা হিসেবে উত্থাপিত একটি ঘটনার তুলনা ওহির সঙ্গে করা হয়েছে বলে হ্যান্ডবিলে দাবি করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মনগড়া ও বিকৃত তথ্য।
“নারী-পুরুষের মেলামেশা, নারীদের পর্দা, সালাত আদায়ের পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে হেযবুত তওহীদের প্রকৃত বক্তব্য উপেক্ষা করে বিভ্রান্তিকর ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। বক্তারা অভিযোগ করেন, হেযবুত তওহীদের বক্তব্য নয় এমন বিভিন্ন মনগড়া বিষয়ের মাধ্যমে জনগণকে সংগঠনটির বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।” বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, উগ্র গোষ্ঠীর নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন ইমাম বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন মসজিদে জুমার খুতবার আগে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালিয়ে সাধারণ মুসল্লিদের উত্তেজিত করে তুলছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার বনপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ কয়েকটি মসজিদে জুমার খুতবায় হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ অপপ্রচার চালানো হয়। এছাড়াও মিথ্যা তথ্য সম্বলিত হ্যান্ডবিল বিতরণ ও মাইকিং করা হয়।