
মফিজুল ইসলাম:
ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার শড়াতলা গ্রামে একশত টাকার স্টাম্পে একটি নোটিশ টানিয়ে গ্রামে বাদ্যযন্ত্র বাজানো এবং হকার ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নোটিশটি ইতোমধ্যেই তোলপাড় সৃষ্টি করেছে, এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
নোটিশে লেখা রয়েছে, “এতদ্বারা শড়াতলা সকল গ্রামবাসীর পক্ষ হতে আনানো যাচ্ছে যে, সকল প্রকার বাদ্যযন্ত্র বাজানো নিষিদ্ধ করা হলো। যারা বাদ্যযন্ত্র বাজাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সাথে তাদেরকে চার হাজার টাকা জরিমানা করা হবে এবং তাদের পিতামাতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
এছাড়া, নোটিশে আরও বলা হয়েছে, “সকল প্রকার হকার ও হিজড়া নিষিদ্ধ করা হলো।” গ্রামবাসীর দাবি, তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যাতে গ্রামে বিশৃঙ্খলা ও মারামারি কমে আসে এবং উঠতি বয়সীদের পড়াশোনায় মনোযোগী করা যায়। গ্রামে ৯৫% মানুষ শিক্ষিত এবং ২০ জনের মতো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী আছেন।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে। কেউ এটি সমর্থন করেছেন, আবার কেউ এটিকে অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক বলে উল্লেখ করেছেন। বিশেষ করে, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার বিষয়টি অনেকেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন।
স্থানীয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্তকে আইনবহির্ভূত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এ ধরনের কর্মকাণ্ড আইনবহির্ভূত।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রত্যেক নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বা সামাজিক অবস্থানের ভিত্তিতে কারও প্রতি বৈষম্য করা যাবে না।