Date: May 10, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ময়মনসিংহ / বাবাকে পিটিয়ে জখম, মামলা করায় প্রাণনাশের হুমকি - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

বাবাকে পিটিয়ে জখম, মামলা করায় প্রাণনাশের হুমকি

May 10, 2025 03:26:25 PM   অনলাইন ডেস্ক
বাবাকে পিটিয়ে জখম, মামলা করায় প্রাণনাশের হুমকি

জমি লিখে না দেওয়ায় জন্মদাতা বাবাকেই পিটিয়ে রক্তাক্ত করল ছেলে। শুধু মারধরই নয়, বাবার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে নিয়ে গেল ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এরপর মামলা করায় চলছে খুনের হুমকি -এমনই অভিযোগ করেছেন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার এক অসহায় বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে বারহাট্টা সদরের কুটুরপাড়া এলাকায়। ভুক্তভোগী মিয়াচান ব্যাপারী পেশায় একজন ব্যবসায়ী। শহরের রাসেল এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ডিমের আড়তের মালিক তিনি।

জানা যায়, গত ২ মে সেখানে হামলা চালায় তাঁর বড় ছেলে সোহেল মিয়া, সাথে ছিল স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসীও। অভিযোগ রয়েছে, তারা দেশীয় অস্ত্র হাতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে মিয়াচানকে বেধড়ক মারধর করে এবং ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। আহত মিয়াচানকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এরপর তিনি পরদিন ৩ মে বারহাট্টা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত করা হয় সোহেল মিয়াসহ গুমুরিয়া গ্রামের মন্নান মিয়া, হাসিদ মিয়া ও বিকাশ মিয়াকে। তবে এখানেই শেষ নয়। মামলা করার পর উল্টো সোহেল মিয়া এলাকায় মানববন্ধন করে বাবার বিরুদ্ধে ‘অভিযান’ শুরু করে। এসব ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

শনিবার দুপুরে মিয়াচান ব্যাপারী নেত্রকোনা প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের জানান, “আমি আমার ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। শহরের একটি বাসা বিক্রি করে তাকে ৫৭ লাখ টাকা দিয়েছি। সে নেশার কারণে ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। এখন আবার জমি লিখে না দেওয়ায় আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।”

অভিযোগ প্রসঙ্গে সোহেল মিয়া বলেন, “বাবা দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানদের জমি লিখে দিতে চাচ্ছেন। আমি বাধা দিলে তিনি আমার নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। তিনি আমাদের মাকে অবহেলা করেন, বৈষম্য করেন।”

এদিকে এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন স্থানীয় কৃষকরাও। এলাকার বজলুর রহমান ও বিল্লাল মিয়া বলেন, “আমরা মিয়াচান ভাইয়ের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করি। কিন্তু সোহেল ১০-১৫ জন নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধান কেটে নিয়ে গেছে। আমরা ঋণ করে জমি চাষ করেছি, এখন ফসল পাচ্ছি না।”

ভুক্তভোগী মিয়াচানের মেয়ে সুমি আক্তার বলেন, “বাবা শহরের বাসা বিক্রি করে সোহেলের ঋণ পরিশোধ করেছেন, বাড়ি করে দিয়েছেন, জমিও কিনে দিয়েছেন। এরপরও সোহেল সন্ত্রাসীদের দিয়ে বাবার ওপর হামলা চালিয়েছে।”

বারহাট্টা থানার তদন্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে মামলা নেওয়া হয়েছে। একজন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের ধরার চেষ্টা চলছে।”