
কোর্ট রিপোর্টার:
পবিত্র রমজানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে দুধ, মাংস ও ডিম বিক্রির ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আগামী ২৬ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
জনস্বার্থে দায়ের করা রিটটি (নং-৮৪৬০/২০২৫) দায়ের করেন সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন। রিটের শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ২৫ মে (রবিবার) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ৪ নম্বর এনএক্স কোর্টে। শুনানিতে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুল নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে অ্যাডভোকেট মো. তাজুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট গৌড় চন্দ্র কর শুনানি করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান সম্রাট, অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান, অ্যাডভোকেট মো. শাহিন হোসেন সরকার, অ্যাডভোকেট জাহিদ আমিন, অ্যাডভোকেট মো. হেমায়েত উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট সাকিব শাহরিয়ার।
প্রসঙ্গত, গত রমজান মাসব্যাপী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রাজধানীর ২৫টি পয়েন্টে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য দুধ, ডিম, গরুর মাংস ও ড্রেসড ব্রয়লার বিক্রি কার্যক্রম চালানো হয়। এসব খাদ্যদ্রব্য পরিবহনে ব্যবহৃত হয় লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি। অনেক জায়গায় বিক্রি হওয়া মাংস ও অন্যান্য খাদ্য অনুপোযোগী ছিল বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় ওঠে।
রিটকারীর অভিযোগ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতার কারণে ধর্মভীরু ও স্বল্প আয়ের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। খাদ্য পরিবহনে লাশবাহী গাড়ি ব্যবহারের বিষয়টি একদিকে যেমন অস্বাস্থ্যকর, অন্যদিকে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতিতে আঘাত হানে।
রিটে আরও বলা হয়েছে, বিষয়টি শুধু দায়িত্বহীনতাই নয়— বরং এটি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। বিগত স্বৈরশাসক সরকারের আমলের নির্ধারিত ঠিকাদার ছাড়াই ‘বংশীয় গরু কাণ্ডে’ আলোচিত জনৈক ইমরানের ঘনিষ্ঠ মাফুজ নামক একজনের মাধ্যমে কার্যক্রমটি পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও লজ্জাজনক ব্যবস্থাপনার যথাযথ তদন্ত করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান রিটকারী।