


মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুটি ব্যাংক লকার থেকে ৮৩২ ভরির স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টি ঘটে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখায়। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাতের ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যৌথভাবে এই লকারগুলো খুলে স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে।
জানা গেছে, লকার দুটি আদালতের অনুমতি নিয়ে খোলা হয়েছিল। একই দিনে পূবালী ব্যাংকের একটি লকারও আদালতের অনুমতি অনুযায়ী খুলে তদন্তকারীরা সেখানে থাকা মালামাল যাচাই করেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, জব্দ করা স্বর্ণালঙ্কারের মধ্যে রয়েছে দলীয় প্রতীক নৌকার উপহার হিসেবে প্রাপ্ত কিছু অলঙ্কার। এছাড়া, শেখ হাসিনার পরিবারের ব্যক্তিগত ব্যবহারযোগ্য কিছু স্বর্ণালঙ্কারও রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তাঁর ভাই শেখ কামাল এবং মেয়ে পুতুলের বিয়ের আংটি, চুড়ি, বালা ও কানের দুল।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার দিলকুশায় অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে লকার দুটি জব্দ করা হয়েছিল। সেগুলোর নম্বর ছিল ৭৫১ ও ৭৫৩। তখন ব্যাংকের এমডি আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, লকার দুটি শেখ হাসিনার ভাড়া করা ছিল এবং নিয়ম অনুযায়ী সংরক্ষিত অবস্থায় ছিল। তিনি আরও উল্লেখ করেছিলেন, গ্রাহকের অনুপস্থিতিতে লকার খুলতে হলে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন এবং লকার খোলার সময় একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
এর আগে পূবালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখার লকারও শেখ হাসিনার নামে জব্দ করা হয়েছিল। সেসময় ১২৮ নম্বর লকারটি শেখ হাসিনার নামে থাকার তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, লকার খোলার জন্য দুটি চাবি লাগে—একটি গ্রাহকের কাছে এবং একটি ব্যাংকের নিরাপত্তা শাখায়।
অগ্রণী ব্যাংকে শেখ হাসিনার একটি ব্যাংক হিসাবও গত বছরের আগস্ট থেকে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশে অবরুদ্ধ রয়েছে। এনবিআরের তদন্তকারীরা সেই হিসাবের ব্যালান্সও যাচাই করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতির’ তদন্ত শুরু করে।