
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুরে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না খেজুর। বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। সেজন্য রমজান শুরুর আগ থেকেই দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ইফতারে বহুল ব্যবহৃত দুই ধরনের খেজুরের দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু এ দামে খেজুর বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা।
গত সোমবার (১১ মার্চ) সরকার অতি সাধারণ খেজুরের দাম কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা এবং বহুল ব্যবহৃত জাইদি খেজুরের দাম কেজিপ্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।
শনিবার (১৬ মার্চ) বিকালে সরেজমিন দেখা যায় উপজেলার শ্রীপুর পৌর এলাকার মাওনা চৌরাস্তায়, নয়নপুর বাজার, জৈনা বাজার, বরমী বাজার , কাওরাইত বাজার, মাষ্টারবাড়ী বাজারে সরকারের বেঁধে দেয়া দাম থেকে বেশি দামে খেজুর বিক্রি করছে। উক্ত বাজারে সরকারের এ নির্দেশনা মেনে চলার কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। বিক্রেতারা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামে খেজুর বিক্রি করলে তাদের লোকসান হবে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, নিম্নমানের (গালা) বাংলা খেজুর ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২২০ টাকার নিচে কোনো খেজুরই নেই। মাঝারি মানের খেজুর কিনতেও গুনতে হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। অতি সাধারণ ও নিম্নমানের খেজুর হিসেবে পরিচিত বাংলা খেজুর দোকানভেদে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। আর ইরাকের জাইদি খেজুর কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। তবে বেশি বিক্রি হচ্ছে বাংলা গালা খেজুর ২২০ টাকা দামে। আবার ভারো মানের বলে মদীনা, কাবাস , মরিয়ম, লেজিম, দামাম , সাহার সহ বিভিন্ন খেজুর ১/২ হাজার টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। দুকানিদের কাছে বিভিন্ন কোম্পানীর প্যাকেটে উৎপাদন ও মেয়াদ উল্লেখ না থাকার কারন জানতে চাইলেও তারা কোন সদুত্তোল মেলেনী তাদের কাছ থেকে।
জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এবার সব ধরনের খেজুরের দাম কেজিতে অন্তত ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
জৈনা বাজারের খেজুর ব্যবসায়ী মজিবুর/সোগাগ জানান, এভাবে দাম বেঁধে দেয়া ঠিক হয়নি। দাম বেঁধে না দিয়ে সরকার টিসিবির মাধ্যমে খেজুর আমদানি করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারত। তাহলে আমাদেরও কোন সমস্যা হতোনা। খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি সরকার দাম নির্ধারন করলে তো হবেনা আমরা আড়তদারদের কাছ থেকে বেশী দামে খেজুর কিনে কম দামে বিক্রি করতে পারবোনা।
জৈনা বাজারে খেজুর কিনতে আসা তারেক হাসান রানা জানালেন পৃথিবীর সব দেশে রোজার সময় পন্যের দাম কমে আমাদের দেশে রোজার মাসে দাম বাড়ে। খেজুর দিয়ে ইফতার করলে সওয়াব হয় এই কারনে বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসনের কোন নজরদারি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। একই অভিযোগ খেজুর কিনতে আসা অনেকেই।
এদিকে রমজান মাসে রোজাদারদের ইফতারী করার প্রধান খাবার খেজুর দিয়ে ইফতার করেন ধর্মপ্রান মুসলমানরা। খেজুর দিয়ে ইফতার করাটা সুন্নত বলে মনে করেন তারা। কিন্তু হাতে গোনা ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেট জিম্মি করে রেখেছেন খেজুরের বাজার। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবার দাবি সাধারন মানুষের।