
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জে কয়েক দিনের বিরতির পর বুধবার রাত থেকে আবারও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এতে জেলার মানুষজনের মধ্যে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত ১৫ দিন ধরে কখনো হালকা, কখনো মাঝারি আবার কখনো টানা ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। অনেকেই আশা করেছিলেন, ঈদুল আজহার সময় আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকবে। তবে বুধবার রাতের ভারী বৃষ্টিতে সেই আশার সমাপ্তি ঘটেছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, “মনে করছিলাম ঈদের আগে আগে দিন ধরব, এখন দেখি আরও উল্টা অর। বইন্যা অই যার। কষ্ট বাড়ের।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টির ফলে জেলার সব নদ-নদী ও হাওরের পানি বাড়ছে। যদিও এখনও সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর এলাকায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৭.৩২ মিটার, যা গতকাল একই সময়ে ছিল ৬.৯৮ মিটার। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৩৪ সেন্টিমিটার। এখানকার বিপৎসীমা ৮.৮০ মিটার।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৮৮ মিলিমিটার, যেখানে আগের দিন ছিল মাত্র ১৮ মিলিমিটার। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে একই সময়ে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১৬ মিলিমিটার। পাউবো কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উজানে ও দেশে বৃষ্টিপাত একসঙ্গে কম হলে হাওর অঞ্চলে ঢলের চাপ কম থাকে।
তবে বুধবার রাতের বৃষ্টির পর সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক ও জগন্নাথপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়তে শুরু করেছে। ছাতকে সুরমা নদী ও জগন্নাথপুরে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।
তাহিরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
সদর উপজেলার হাওরপাড়ের বাসিন্দা খোরশেদ মিয়া বলেন, “উজানের ঢলে হাওরে পানি বাড়ছে। এভাবে বৃষ্টি হলে বন্যা হয়ে যাবে।”
সুনামগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকার ব্যবসায়ী গনি মিয়া বলেন, “বুধবার রাতে পানি বেশি বাড়ছে। মেঘ থামছে না। মেঘ না থামলে পানি আরও বাড়ব।”
পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, “মূলত ভারী বৃষ্টির কারণেই পানি বাড়ছে। পূর্বাভাসে আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পানি আরও বাড়তে পারে।”