Date: May 19, 2024

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / রংপুর / হাতীবান্ধায় শশ্মানের মন্দির ভাংচুর, প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

হাতীবান্ধায় শশ্মানের মন্দির ভাংচুর, প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

November 11, 2023 02:41:31 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
হাতীবান্ধায় শশ্মানের মন্দির ভাংচুর, প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

হাতীবান্ধা সংবাদদাতা, লালমনিরহাট:
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায়  মন্দির ভাংচুর,শশ্মানে অগ্নিসংযোগ ও পূজা করতে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। এ সময় ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করে প্রসাশনকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা।

শনিবার দুপুরে উপজেলার মেডিকেল মোড় গোল চত্তর এলাকায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা। এর আগে ওই দিন সকালে উপজেলা পরিষদ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন শেষে মানববন্ধনে মিলিত হন।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহাজোট লালমনিরহাট জেলার সভাপতি রনবীর মিত্র বসুনিয়া, সাধারণ সম্পাদক সুবল চন্দ্র, বুড়া সাড়ডুবি সার্বজনীন মহাশ্মশানের মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক সবুজ চন্দ্র, পূজারী নিরো বালা, অমল চন্দ্র রায়, দিপঙ্কও রায়, জগেশ চন্দ্র রায় প্রমূখ।

মানববন্ধনে বুড়া সাড়ডুবি সার্বজনীন মহাশ্মশানের মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক সবুজ চন্দ্র বলেন, প্রথমে স্থানীয় কিছু লোকজন আমাদের মন্দির ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। আমরা এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছি। কিন্ত পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। উল্টো গড্ডিমারী ইউপির চেয়ারম্যান শ্যামল ও ফকিরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোকন আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। আমাদের পূজা আর্চনা করতে দিচ্ছেন না। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।

মানববন্ধনে ওই মন্দিরের পূজারী নিরো বালা বলেন, শ্যামল ও খোকন চেয়ারম্যান আমাদের পূজা আর্চনার জিনিস পত্র পা দিয়ে লাথি মেরে ভেঙ্গে দিয়েছেন। পুলিশ এখ নপর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ জাতীয় মহাজোট লালমনিরহাট জেলার সভাপতি রনবীর মিত্র বসুনিয়া বলেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি জড়িতদের আইনের আওতা এনে ব্যবস্থা গ্রহন করা না হয় তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহন করবো।

জানা গেছে, ১৯৩৫ সালে ওই শশ্মানটি স্থাপিত করা হয়। হঠাৎ করে গত কয়েক মাস ধরে শশ্মানের জমিটি নিজেদের দাবী করছেন রেজাউল হক, রেজাউনুল হক সুজন, মাইদুল হক মহল, মতিউর রহমান, সাজু ইসলাম, দুলালসহ আরও অনেকে। এ নিয়ে মন্দির কমিটির সাথে তাদের বিরোধ চলে আসছে। গত শুক্রবার সকালে অভিযুক্তরা ওই শশ্মানের ঘর ও মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ২৩ জনের না উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০/৪০ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন রতন চন্দ্র বর্মন। এ নিয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। অভিযুক্তরা গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামলের আত্বীয় হওয়ায় হাতীবান্ধা থনার ওসি বিষয়টি তাকে অবগত করেন। ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামল ফকির পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান খোকনকে সাথে নিয়ে শনিবার বিকেলে ওই এলাকায় গিয়ে বিষয়টি জোড়পূর্বক আপোষ মিমাংসা করার চেষ্টা করেন। এ পর্যায়ে উত্তোজিত হয়ে শ্যামল ও খোকন চেয়ারম্যান হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হুমকি ধামকি ও গালাগালি করেন। পরে হিন্দু সম্প্রাদয়ের লোকজন তাদেরকে অবরুদ্ধ কওে রাখেন। খবর পেয়ে ইউএনও, এএসপি, ওসি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন।

এবিষয়ে জানতে গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তিনি কলটি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, আমরা কোন ভাংচুর করিনি। হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমাদের ঘটনাস্থলে মিমাংসার জন্য যাইতে বলছে আমরা গেছি।  

এ বিষয়ে জানতে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলমের মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তিনি কলটি রিসিভ করেননি।