‘উগ্রবাদী বক্তব্য দিয়ে, গুজব-হুজুগ সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক তাণ্ডব আমরা অনেক দেখেছি। মানুষ না জেনে, না বুঝে সামাজিক মাধ্যমে এসব তথ্য শেয়ার করছে এবং সহিংস কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে। এতে করে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশে এই পরিস্থিতি আর চলতে দেওয়া যায় না। উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বীজ উপড়ে ফেলতে হবে। হেযবুত তওহীদ মাঠে নেমেছে, এবার এই উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার কবর রচিত হবে ইনশাল্লাহ’ -বলেন হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।
বুধবার (১০ জুলাই) সকালে শেরপুর পৌর টাউন হল রুমে উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, ‘লেবাসধারী এক শ্রেণির ভণ্ড আলেমদের স্বার্থবাদী উগ্র কর্মকাণ্ডের কারণে ইসলামের গায়ে আজ কালিমা লিপ্ত হয়েছে। আর এদের মুখোশ উন্মোচন করায় তারা হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ওয়াজ মাহফিলে মিথ্যাচার, অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আসছে। তিনি উগ্রবাদী ধর্মব্যবসায়ীদের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে কোনো লাভ হবে না। হেযবুত তওহীদ সত্য নিয়ে এসেছে, মিথ্যার ধ্বংস এখন সময়ের ব্যাপার।’ এসময় ধর্মব্যবসায়ীদের বিভিন্ন অপপ্রচারের কড়া জাবাব দেন তিনি। হেযবুত তওহীদের বক্তব্য স্পষ্ট দাবি করে কোনো প্রকার অপপ্রচারে কান না দিয়ে হেযবুত তওহীদের বক্তব্য ভালো করে জানা, পড়া ও শোনার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান হেযবুত তওহীদের এই শীর্ষ নেতা।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিন, ইউক্রেনসহ পৃথিবীর অনেকগুলো দেশে যুদ্ধ চলছে। যার ফলে অর্থনীতিতে বিরাট নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামের নাগাল টেনে ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকারগুলো। টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণ। দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে দেশের সর্বোচ্চ স্তর থেকে কেরানি লেভেল পর্যন্ত। সামাজিক সংকট ও রাজনৈতিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।’
এমন অবস্থার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অশান্তির কারণ মানুষ তার সামগ্রিক জীবনে আল্লার হুকুম বাদ দিয়েছে। এই অবস্থায় জাতীয়, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক অর্থাৎ সামগ্রিক জীবনে একমাত্র আল্লাহর জীবন বিধান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই এই অশান্তি থেকে বাঁচা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সকাল ১০ টায় হেযবুত তওহীদের শেরপুর জেলা শাখা আয়োজিত এ আলোচনা সভায় হেযবুত তওহীদের শেরপুর জেলা সভাপতি মো. মমিনুর রহমান পান্নার সভাপতিত্বে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক ও হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় নারী বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী।
শেরপুর জেলা নারী বিষয়ক সম্পাদক শারমিন আক্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এনামুল হক বাপ্পা, হেযবুত তওহীদের ময়মনসিংহ বিভাগীয় দায়িত্বশীল মো. রহমত উল্লাহ রানা, সহ-সভাপতি মোর্শেদ খান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় নারী সম্পাদক রোজিনা আক্তার, ময়মনসিংহ জেলা সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, নেত্রকোনা জেলা সভাপতি মো. আব্দুল কাইয়ুম, কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি মো. হিমসেল ভূঞা প্রমুখ।
প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত হাজারো জনতার উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে অনুষ্ঠানস্থল। ‘শেরপুরের মাটি, হেযবুত তওহীদের ঘাঁটি’ এই স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয় পৌর অডিটোরিয়াম। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও অনুষ্ঠানের শেষ অবধি লোকারণ্য ছিল হল রুম।
সবশেষে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে আগত দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।