Date: May 02, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / বরিশাল / কাঠালিয়ায় ভোররাতে পুলিশ পরিচয়ে ভাঙচুর, মারধর ও লুটের অভিযোগ - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

কাঠালিয়ায় ভোররাতে পুলিশ পরিচয়ে ভাঙচুর, মারধর ও লুটের অভিযোগ

May 01, 2025 11:45:29 PM   অনলাইন ডেস্ক
কাঠালিয়ায় ভোররাতে পুলিশ পরিচয়ে ভাঙচুর, মারধর ও লুটের অভিযোগ

কাঠালিয়া সংবাদদাতা:
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ আনইলবুনিয়া গ্রামে পুলিশ পরিচয়ে ঘরে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের মারধর, দোকান ভাঙচুর ও মালামাল লুটের অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) ভোররাত চারটার দিকে বটতলা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এ সময় বাড়ির সদস্যদের বেঁধে ফেলা হয় এবং বাজারের কয়েকটি দোকান ভেঙে লুটপাট চালানো হয়।

ভুক্তভোগী পরিবার প্রধান হারুন অর রশিদ (৬৫) কাঁঠালিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি জানান, ২০০৭ সালে তিনি বটতলা বাজারে ছয় শতাংশ জমি কিনে ছয়টি টিনের দোকানঘর তৈরি করেন এবং তার দুই ছেলেকে নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। ওই জমির পেছনে বসতঘর তৈরি করে পরিবারসহ বসবাস করে আসছেন। তার অভিযোগ, পারিবারিক জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জের ধরে শ্যালক ফয়সাল ও একই গ্রামের ব্যবসায়ী নাসির খান সরোয়ারের ভাড়া করা লোকজন পরিকল্পিতভাবে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে।

হারুন অর রশিদের ছেলে মেহেদী হাসান জানান, ভোররাতে প্রায় ১৫ জন অস্ত্রধারী তাদের বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে ঘরের মধ্যে থাকা ৫টি মোবাইল ফোন ও ১০ ভরি স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। এ সময় বাইরে অবস্থান করা প্রায় ৫০ জনের একটি দল তাদের ছয়টি দোকান ভেঙে মালামাল, টিন ও কাঠ ট্রাকে তুলে নিয়ে যায়। দোকানগুলোর মধ্যে ছিল মুদির দোকান, চায়ের দোকান, কসমেটিকসের দোকান ও মুরগির দোকান। হামলাকারীরা মেহেদীর ছোট দুই বোনকেও নির্মমভাবে মারধর করে। ঘটনার সময় চারপাশে আলো ফোটেনি, ফজরের আজান চলছিল মাত্র।

মেহেদী আরও জানান, সম্প্রতি ফয়সাল আহম্মেদ নামের একজনের কাছ থেকে বটতলা বাজারের ছয় শতাংশ জমি কেনেন ঢাকার ব্যবসায়ী নাসির খান। জমির দলিল সম্পাদনের পর ২২ এপ্রিল থেকে নাসির খান জমির দখল নিতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন এবং উচ্ছেদের হুমকি দেন। তিনি দাবি করেন, ওই জমি দখলের উদ্দেশ্যেই ভাড়া করা লোকজন দিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে।

এ বিষয়ে হারুন অর রশিদের শ্যালক ফয়সাল হোসেন বলেন, তার বাবা আব্দুল গনি হাওলাদার তাকে ছয় শতাংশ জমি লিখে দেন। তিনি ছোট হওয়ায় বোন ও ভগ্নিপতির তত্ত্বাবধানে ছিলেন। তাদেরকে ওই জমিও লিখে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হারুন অর রশিদ তাকে লালনপালন না করে জমি দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। জমির দখল না পেয়ে বাধ্য হয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনের কাছে জমিটি বিক্রি করেন বলেও জানান ফয়সাল।

অভিযোগের বিষয়ে নাসির খানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ভুক্তভোগীরা জানায়, ঘটনার সময় ৯৯৯-এ ফোন করা হলেও কাঁঠালিয়া থানা থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে থাকা সত্ত্বেও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে আড়াই ঘণ্টা সময় নেয়।

বটতলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. সাইদুর রহমান বলেন, হারুন ও তার শ্যালকের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। তবে দোকান ভাঙচুরের সময় কারা ঘটনা ঘটিয়েছে তা তিনি দেখেননি।

এ বিষয়ে কাঁঠালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মং চেনলা বলেন, “ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনবল কম থাকায় ঘটনাস্থলে যেতে কিছুটা দেরি হয়েছে।”