Date: May 11, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / রংপুর / নির্ধারিত সময়ের আগেই বাজারে অপরিপক্ব লিচু! - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

নির্ধারিত সময়ের আগেই বাজারে অপরিপক্ব লিচু!

May 10, 2025 04:43:52 PM   ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
নির্ধারিত সময়ের আগেই বাজারে অপরিপক্ব লিচু!

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি:
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় নির্ধারিত সময়ের আগেই বাজার ভরে গেছে অপরিপক্ব লিচুতে। এসব লিচু প্রথম দেখাতেই বোঝা যায়, এখনো পরিপক্ব হয়নি। তবুও অতিমুনাফার আশায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আমদানি করে এই উপজেলায় নিয়ে আসা হয়েছে লিচুগুলো। সুস্বাদু ও রসালো এই লিচু পরিপক্ব হয়ে বাজারে আসতে সময় লাগবে অন্তত ৮ থেকে ১০ দিন। যার মধ্যে থাকবে আগাম জাতের মাদ্রাজি ও বোম্বাই লিচু। এর ঠিক কিছুদিন পরই বাজারে মিলবে চায়না থ্রি ও বেদেনা জাতের লিচু।

সরেজমিনে ঘিওর বাজারসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমি ফল বিক্রেতারা অস্থায়ী দোকানে আঁটি জাতের লিচু বিক্রি করছেন। উপজেলার সর্বত্রই এখন কমবেশি বিক্রি হচ্ছে লিচু। বিক্রেতারা রাজশাহী, দিনাজপুর ও যশোর থেকে এসব লিচু আনেন। পুরোপুরি না পাকলেও এসব লিচুর দাম বেশ চড়া। বাজারে প্রতি পিস লিচু বর্তমানে আড়াই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এই লিচু কেনার স্বাদ থাকলেও সাধ্য নেই অনেকের। তাই অধিকাংশ মানুষই ৫০ পিসের বেশি লিচু কিনতে পারছেন না।

এমনই এক ক্রেতা, দিনমজুর মো. আবুল হোসেন বলেন, দিনমজুরি করে কোনোভাবে সংসার চালাই। বাচ্চারা বলেছে লিচু খাবে। মৌসুমের প্রথমদিকের লিচু, দেখতেই বোঝা যাচ্ছে এখনো ঠিকমতো পাকেনি। তবুও বাচ্চাদের আবদার মেটাতে ৫০ পিস লিচু কিনেছি। অধিকাংশ লিচুই খুব ছোট, এর প্রতি পিসের দাম পড়েছে ৩ টাকা করে।

এদিকে, চরবাইলজুরী পঞ্চরাস্তার ভ্রাম্যমাণ মৌসুমি ফল বিক্রেতা মো. রুবেল হোসেন জানান, বিগত ৫ বছর ধরে আম, লিচু এবং পেয়ারাসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল বিক্রি করছি। এবার একটু আগেভাগেই বিভিন্ন জেলা থেকে লিচু আসতে শুরু করেছে। তাই আমিও আগেই আড়ত থেকে লিচু এনে বিক্রি করছি। প্রতিদিন ভ্যানগাড়িতে করে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে লিচু বিক্রি করছি। বর্তমানে অধিকাংশ লিচুই আঁটি জাতের। এই লিচুই প্রতি পিস আড়ত থেকে আমাদের কেনা পড়ে ২ টাকার মতো। আর ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি প্রতি পিস আড়াই থেকে তিন টাকা। কিছুটা আগেভাগে বাজারে লিচু আসায় চাহিদাও অনেকটা বেশি। যার ফলে প্রতিদিন আমিই ৫ হাজার পিসের মতো লিচু বিক্রি করতে পারি। তবে আরও ভালো জাতের লিচু বাজারে আসতে এখনো ১০ দিনের মতো সময় লাগবে। ওই লিচু বাজারে এলে দাম আরও বাড়বে।

এ বিষয়ে সিংগাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, বাজারে বর্তমানে যেসব লিচু দেখা যাচ্ছে, তার মধ্যে শুধু স্থানীয় কিছু জাতের লিচু বিক্রির সময় হয়েছে। আর অন্য জাতের লিচু আরও কিছুদিন পরে বাজারে আসবে।

চিকিৎসকরা জানান “লিচু একটি উচ্চ শর্করা সমৃদ্ধ রসালো ফল, যা পরিপক্ব অবস্থায় খাওয়াই সবচেয়ে উপকারী। কিন্তু অপরিপক্ব অবস্থায় এই ফল খেলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অপরিপক্ব লিচুতে 'হাইপোগ্লাইসিন' নামক এক ধরনের রাসায়নিক থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। দু-একটি খেলে সমস্যা নাও হতে পারে, তবে পরিমাণে বেশি খেলে ডায়রিয়া, পেটব্যথা, বমি, এমনকি বিষক্রিয়া হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি মারাত্মক হতে পারে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু এই লিচুগুলো পাকেনি, তাই স্বাভাবিকভাবে তা হজমেও সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই আমাদের অনুরোধ, কেউ যেন অপরিপক্ব লিচু খাওয়ার আগ্রহ না দেখান। অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে যেন শিশুরা এই সময়ে বেশি লিচু না খায়।”

ঘিওর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাসিব আহসান বলেন, বাজারে যে সমস্ত অপরিপক্ব লিচু এসেছে, সেগুলো দু-একটি খেলে পেটের পীড়া হতে পারে। এর চেয়ে বেশি খেলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।