
পাটগ্রাম সংবাদদাতা, লালমনিরহাট:
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের সরকার পাড়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাতিজার মারধরে গুরুতর আহত হন মোজাফফর হোসেন (৬৫)। ঘটনার ৯ দিনের মাথায় গত ১২ অক্টোবর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। বিষয়টি নিয়ে পাটগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
রবিবার (০৫ নভেম্বর ) বিকাল ৩টায় নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাবা হত্যার বিচারের দাবিসহ প্রতিপক্ষের হুমকি-ধমকির অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবারের সদস্যরা। বাবার মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে প্রতিপক্ষরা উল্টো নানা রকম হুমকি দিয়ে আসছে নিহতের পরিবারকে। এ অবস্থায় নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে ওই পরিবারটি। নিহতের ছেলে মো. সুজন ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, 'জমি নিয়ে চাচাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন গত ৩ অক্টোবর সকাল ০৭ টার দিকে চাচাতো ভাই নাদিরুজ্জামান লিখন (৩৫) আমাদের বাড়ির সীমানায় ঢুকে অকাট্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় আমার বাবা মোজাফফর হোসেন বাধা দিতে গেলে, তাকে ৭ নম্বর আসামী ইউনুস আলী, নাদিরুজ্জামান লিখন(৩৫), আসাদুজ্জামান লিমন(৩০), বাবুল(৪০), সফিকুল ইসলাম (৫০), শিমি আক্তার (২৭), মোজাম্মেল হক (৫৫), রাশেদা বেগম(৩০), ফারুক হোসেনের (৩২) ও অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন মারপিট শুরু করেন। চাচাতো ভাই লিখন (৩৫) এসে আমার বাবাকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন।
লিখিত বক্তব্যে নিহতের ছেলে আরো বলেন, 'আহত বাবার চিৎকার শুনে আমার মা ছুটে গেলে তাকেও কিল ঘুষি মারতে থাকে তারা। পরে প্রতিবেশীদের সহায়তায় বাবাকে উদ্ধার করে পাটগ্রাম হাসপাতলে নেওয়া হলে কর্মরত চিকিৎসকগণ সাথে সাথে রংপুরে রেফার্ড করেন। এবং সেখানে প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার্ড করেন।ঘটনার নয় দিন পর মারা যান তিনি।'
সুজন আরো বলেন, 'আমার বাবাকে তারা পিটিয়ে হত্যা করেছে। এই ঘটানার পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়ছেন আমার আরেক জেষ্ঠা মোজাম্মেল হক। তার পরিকল্পনা করে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে তার ইন্ধনে হত্যাকারী লিখন ও তার লোকজন অব্যাহতভাবে আমাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।তাদের হুমকিতে আমরা নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আছি। থানায় মামলা রেকর্ড করার পরও আসামী ধরছে না পুলিশ। আমার বাবার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই প্রশাসনের কাছে।'
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইন্ধনদাতা ও আসামীদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পাটগ্রাম থানার ওসি মোঃ ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ উদ্ধার করে ওই দিনই ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাট মর্গে পাঠাই। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।