Date: October 26, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / প্রযুক্তি / পৃথিবীর আসলে দুই চাঁদ! নাসার চমকপ্রদ ঘোষণা - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

পৃথিবীর আসলে দুই চাঁদ! নাসার চমকপ্রদ ঘোষণা

October 22, 2025 02:02:56 PM   অনলাইন ডেস্ক
পৃথিবীর আসলে দুই চাঁদ! নাসার চমকপ্রদ ঘোষণা

শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, পৃথিবীর আসলে শুধু একটি নয়—দুটি চাঁদ রয়েছে! সম্প্রতি নাসা এক ঘোষণায় জানিয়েছে, বহু বছর ধরেই পৃথিবীর সঙ্গে ঘুরছে এক “দ্বিতীয় চাঁদ”। ১৯৬০-এর দশক থেকেই এটি পৃথিবী ও সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, আর বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি অন্তত ২০৮৩ সাল পর্যন্ত আমাদের কক্ষপথে থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াই সম্প্রতি এই অদ্ভুত মহাজাগতিক সঙ্গীকে শনাক্ত করেছে।

আমাদের পরিচিত মূল চাঁদটি জন্ম নেয়েছিল কয়েক বিলিয়ন বছর আগে, যখন একটি বিশাল মহাজাগতিক বস্তু পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সেই সংঘর্ষের ধ্বংসাবশেষ থেকেই তৈরি হয় বর্তমান চাঁদ—যা পৃথিবী থেকে প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এর ব্যাসার্ধ ১,৭৪০ কিলোমিটার, অর্থাৎ পৃথিবীর প্রস্থের এক-তৃতীয়াংশেরও কম। চাঁদটি প্রতি ২৭ দিনে একবার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে, যদিও পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে আমাদের কাছে এটি ২৯ দিনে একবার ঘোরে বলে মনে হয়। মজার ব্যাপার হলো, চাঁদটি প্রতি বছর পৃথিবী থেকে প্রায় এক ইঞ্চি করে দূরে সরে যাচ্ছে।

কিন্তু পৃথিবীর “দ্বিতীয় চাঁদ”টির গল্পটি একেবারে ভিন্ন। নাসার তথ্যমতে, এটি আসলে একটি কোয়াসি-মুন—অর্থাৎ এমন একটি মহাজাগতিক বস্তু, যা সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর প্রায় সমান গতিতে ঘোরে। এর নাম ২০২৫ পিএন৭ (2025 PN7)। দেখতে অনেকটা ছোট একটি গ্রহাণুর মতো, যার আকার মাত্র ১৮ থেকে ৩৬ মিটার। এটি সরাসরি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে না; বরং সূর্যকে কেন্দ্র করে এমনভাবে ঘোরে যে, পৃথিবীর সঙ্গে তার অবস্থান প্রায় একই থাকে—ফলে মনে হয় যেন এটি আমাদের এক অদৃশ্য সঙ্গী।

বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী, এই কোয়াসি-মুনটি প্রায় ৬০ বছর ধরে পৃথিবীর সঙ্গে থেকে আসছে এবং ২০৮৩ সালের দিকে কক্ষপথ ত্যাগ করবে। তবে এটি আমাদের মূল চাঁদের মতো জোয়ার-ভাটায় কোনো প্রভাব ফেলে না, কিংবা পৃথিবীর মহাকর্ষেও কোনো পরিবর্তন ঘটায় না। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৪ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে—যেন এক নীরব, অদেখা মহাজাগতিক সহযাত্রী, যার উপস্থিতি আমরা প্রায় টেরই পাই না।

এখন পর্যন্ত এমন কোয়াসি-মুন শনাক্ত হয়েছে মাত্র আটটি। বিজ্ঞানীদের মতে, এই রহস্যময় সঙ্গীরা আমাদের সৌরজগতের গতিশীলতা এবং গ্রহাণুর চলাচল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উন্মোচনে সাহায্য করতে পারে। হয়তো এই “দ্বিতীয় চাঁদ” একদিন আমাদের মহাজাগতিক ইতিহাসের নতুন এক অধ্যায় খুলে দেবে।