Date: May 03, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / জাতীয় / আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে নোয়াখালীবাসী - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে নোয়াখালীবাসী

August 23, 2024 01:17:37 PM   অনলাইন ডেস্ক
আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে নোয়াখালীবাসী

ভারী বৃষ্টি ও ফেনীর মহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে নেমে আসা পানির ঢলে ভেসে গেছে নোয়াখালীর অধিকাংশ এলাকা। টানা বৃষ্টিতে বন্যার পানি আরো ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। এতে অনেকগুলো গ্রাম বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গ্রামীণ সড়কগুলো পানিতে ভেসে যাওয়ায় সব ধরনের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। এতে চরম দুর্ভোগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রয়োজনীয় সহায়তা না পাওয়ায় আকাশ পানে আল্লাহর সাহায্যর জন্য তাকিয়ে আছে অসহায় বন্যার্তরা। 
আজ শুক্রবার (২৩ আগস্ট) নোয়াখালীর চাষীরহাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাষীরহাট ইউনিয়র পরিষদ ও বাজার হাঁটু পানির নিচে তলিয়ে গেছে। চাষীরহাট উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন মৎস্য প্রকল্পের একাধিক ঘেরের প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। চাষীরহাট শহীদী জামে মসজিদে হাঁটু পরিমাণ পানি জমেছে। প্রায় প্রতিটি বসতঘরেই হাঁটু-কোমড় সমান পানি উঠেছে।  
চাষীরহাট নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে গলা সমান পানি। যে মাঠে প্রতিদিন বিকালে খেলাধুলা করত শিক্ষার্থীরা সেই মাঠ যেন এখন বিশাল দিঘী। বিদালয়ের ঢোকার রাস্তাকে দেখে খাল মনে হয়। পানি স্কুল ভবনের ছাদ ছুঁই ছুঁই করছে। স্কুলের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে প্রায় সবকিছুই পানিতে ডুবে আছে। 

456694010_1042615674534070_2521710559008693796_n

চাষীরহাট নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শহীদী জামে মসজিদের খতিব রাকিব আল হাসান বলেন, আমার জীবনে কখনোই এমন বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে পড়িনি। এমন পরিস্থিতিতে যারা কখনো পড়েননি তারা দূর থেকে কেবল কিছু ভিডিও আর ছবি দেখে বন্যার ভয়াবহতা কোনোভাবেই উপলব্ধি করতে পারবেন না। 
এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো- বিশুদ্ধ পানি, খাবার, টয়লেট ব্যবস্থা আর ঘুমের জন্য একটু শুকনা জায়গা- মন্তব্য করেন তিনি।
চাষীরহাট উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. মহি উদ্দিন বলেন, আমাদের কয়েক কোটি টাকার মাছ এবং কয়েক কোটি টাকার গরুর খামার পড়েছে সবচেয়ে ঝুঁকিতে। প্রচণ্ড বৃষ্টি আর বন্যার মধ্যেও আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে মৎস্য প্রকল্পগুলোর চতুর্দিকে অনেক উঁচু করে বাঁশ দিয়ে নেট বেঁধে রক্ষা করার চেষ্টা চালাচ্ছি কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারব কি না জানি না। তবে ইতোমধ্যে ২০ লক্ষাধিক টাকার মাছ বেরিয়ে গেছে। খামারের গরুগুলো অন্যত্র স্থানান্তরিত করা গেলেও প্রায় ৮০টি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে ৩২ টি গরুর অবস্থা গুরুতর। 
কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে দেখা যায়, মানুষজন খুবই মানবেতর অবস্থায় আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। তবে খাদ্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না পেয়ে তারা অসহায় হয়ে সৃষ্টিকর্তার দিকে তাকিয়ে আছেন। বিভিন্ন উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ বিভিন্ন ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধার কার্যক্রম চলমান থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনা অপ্রতুল।  
চাষীরহাট হোমিও ক্লিনিকের ডাক্তার ডা. তুহিন মাহমুদ বলেন, টিউবয়েলগুলে ডুবে যাওয়ায় সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে ইতোমধ্যে। এখন সবাই বৃষ্টির পানি ধরে রেখে পান করছে। কিন্তু বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সুপেয় পানির অভাব মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। সেক্ষেত্রে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। বন্যার্তদের শুকনা খাবার সরবরাহের পাশাপাশি এসব পণ্যসামগ্রীও সরবরাহেও ব্যবস্থা নিতে হবে কর্তৃপক্ষকে। 

456476935_1042615804534057_7564455574936974547_n