
গাজীপুর সংবাদদাতা:
গাজীপুরে দাম্পত্য কলহ ও কথা কাটাকাটির জের ধরে স্ত্রী ও চাচি-শাশুড়ির সাথে জেদ করে ৬ বছর বয়সী শিশুশ্যালককে নিজের পরিহিত লুঙ্গি পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুলাভাই। গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা এলাকায় গত ১৩ মার্চ এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
পরে ১৫ মার্চ লাশ উদ্ধার ও সর্বেশষ ২২ মার্চ ঘাতক দুলাভাইকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। নিহত শিশুর নাম সাখাওয়াত। সে রংপুরের মিঠাপুকুর থানার বড় হযরতপুর এলাকার জাফর আলী ও লাকী বেগম দম্পত্তির ছেলে। তার বাবা মা কর্মের খাতিরে গাজীপুরের বাসন থানা এলাকায় সপরিবারে বসবাস করে আসছে। ঘাতক দুলাভাইয়ের নাম তাহারুল মিয়া। তাহারুল তার স্ত্রীকে নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের পাশের বাসাতেই ভাড়া থাকতো। গাজীপুর মহানগর পুলিশের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে মহানগর পুলিশের ডিবি কার্যালয়ে এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
এসময় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নিহত শিশু সাখাওয়াতের চাচাতো বোন শারমিনের সাথে বছর দুয়েক আগে তাহারুল মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল এবং সম্প্রতি তা প্রকট আকার ধারণ করে। সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ বিকালে গোসলের সময় লুঙ্গি দিতে দেরি হওয়ার জের ধরে তাহারুল ও শারমিনের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়। সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়া করায় তাহারুলের চাচি শাশুড়ি অর্থাৎ শিশু সাখাওয়াতের মা এ ব্যাপারে তাহারুলকে বকাঝকা করে। তাহারুল এতে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, ঝগড়াঝাটির পর রাগান্বিত মাথায় তাহারুল বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় গেটের কাছে শিশু সাখাওয়াতকে দেখতে পায় ও মজা কিনে দেওয়ার কথা বলে সাথে করর নিয়ে যায়। পরে ফাকা নির্জন জায়গায় নিয়ে নিজের পরিহিত লুঙ্গি পেচিয়ে সাখাওয়াতকে হত্যা করে সে। এরপর অন্ধকারে লাশ মাটিচাপা দিয়ে দেয় পাষণ্ড তাহারুল।
পুলিশ জানায়, শিশু তাহারুলকে খুঁজে না পেয়ে গত ১৪ মার্চ বাসন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করে ও এর প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের হয়। ঘটনার ৯ দিন পর ২২ মার্চ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে ক্লু-লেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও গাইবান্ধা থেকে সন্দেহভাজন আসামীকে আটক করতে সক্ষম হয় বাসন থানা পুলিশ। আটককৃত আসামি তাহারুল ইসলাম অপরাধ স্বীকার করে নিজেই ঘটনার বিবরণ দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিবি দক্ষিণ) ইব্রাহিম খান পিপিএম, উপ-কমিশনার (অপরাধ উত্তর) তোরাব মোহাম্মদ শামসুর রহমান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাসন থানার উপ-পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।