Date: May 13, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / রংপুর / সৈয়দপুরে কুরবানি ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারপাড়ায় - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

সৈয়দপুরে কুরবানি ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারপাড়ায়

June 11, 2024 07:58:08 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
সৈয়দপুরে কুরবানি ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারপাড়ায়

সৈয়দপুর প্রতিনিধি, নীলফামারী:
দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। আর মাত্র কয়েকদিন পরই কোরবানির ঈদ। এই ঈদের অন্যতম ঐতিহ্য হলো পশু কুরবানি করা।সাধ আর সাধ্যের মধ্যে কোরবানি দেওয়ার জন্য অনেকের কেনা হয়ে গেছে পছন্দের পশু। কোরবানির পশু জবাই, চামড়া ছিলানো এবং মাংস কাটার জন্য প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম কিনতে ছুটছেন কামারপাড়ায়। কারিগরদের যেন দম ফেলারও সময় নেই। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কাজ। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কয়েকগুণ ব্যস্ততা বেড়ে যায় তাদের। তবে ব্যস্ততা বাড়লেও সরঞ্জাম তৈরীতে ব্যবহৃত লোহার দাম বাড়ায় লাভ কমেছে বলে জানিয়েছেন কারিগররা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, লোহা, কয়লা সহ তৈরি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি ও সরবরাহ কম থাকায় ছুরি, চাপট, দা-বঁটির দাম একটু বেশি এজন্য বিক্রিও আর আগের মতো হয় না । সরেজমিন সৈয়দপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাতুড়ি আর লোহার টুংটাং শব্দে মুখরিত কামার পাড়া।

কেউ হাঁপর টানছেন, সেই হাঁপরে পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা। কেউ কেউ হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি করছেন দা, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। অনেকে আবার এসেছেন পুরাতন যন্ত্রপাতিগুলোকে শান দেওয়ার জন্য। ঈদের দিন পর্যন্ত চলবে তাদের এমন ব্যস্ততা।তাই খাওয়া-দাওয়া ভুলে কাজ করছেন তারা। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কাজ। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কয়েকগুণ ব্যস্ততা বেড়ে যায় কামারদের। প্রতিবছর কোরবানির ঈদে তাদের জিনিসপত্রের কেনা-বেচা বেড়ে যায়। এ থেকে অর্জিত টাকায় সারা বছর চলে সংসার। বছরের বেশিরভাগ সময় কামার শিল্পীদের কাজ কম থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়।  তাই তারা এ সময়টাকে কাজে লাগান।

জানা যায়, উপজেলার প্রায় একশতাধিক কামার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর সাথে জড়িত রয়েছে দুইশতেরও অধিক মানুষ। এখানেই তৈরী হয় ছুরি, চাপট, দা ও বঁটি, চাপাতি সহ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় নানা জিনিস। সারাবছর এসব জিনিসের ব্যবহার হলেও কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে এর চাহিদা বাড়ে কয়েকগুণ।কয়েকজন কামারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, দা ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা, বটি ২৫০ থেকে ৫০০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা ও চাপাতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা।

কামার জিল্লুর রহমান বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়লার দাম ও শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে গেছে। তবে এখন হাতে কাজ অনেক। কাজের চাপে কখন খাওয়ার সময় চলে যাচ্ছে আমরা টেরও পাই না। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে বিক্রি তত বাড়ছে। স্থানীয় কসাইদের চাহিদা মিটিয়ে বাইরের এলাকা থেকেও অর্ডার নেওয়া হচ্ছে। সারা বছর কাজের চাপ থাকে না। যা লাভ এই ঈদে, তাই ঈদে সামান্য একটু বেশি নিয়ে থাকি।

কোরবানির সরঞ্জাম কিনতে আসা মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা আবু সায়েম অন্তর বলেন, এবার গরু একটু আগেভাগেই কিনেছি। কোরবানির জন্য প্রয়োজন চাকু ও ছুরি। সে কারণে বাজারে এসেছি দা, বটি ও ছুরি কিনতে।বাড়ি থেকে পুরানো দা, বঁটি এবং পশু জবাই করা ছুরি নিয়ে কামারের কাছে এসেছেন উপজেলার ধলাগাছ গ্ৰামের বাসিন্দা আব্দুল রহিম। তিনি বলেন, কোরবানির জন্য পছন্দ করে একটি গরু কিনেছি।

এখন মাংস কাটাকাটির জন্য পুরনো এ সরঞ্জাম নিয়ে এসেছি কামারের কাছে। অপরদিকে ক্রেতা ফিরোজ ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ঈদ উপলক্ষে দা, চাপাতি ও ছুরির দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। ছুরি শান দেওয়ার জন্য ১০০ টাকা থেকে শুরু করে কাজের গুণাগুণের ওপর ভিত্তি করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।