
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে দুটি বিভাগ গঠনের প্রেক্ষিতে জারি করা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে দেশের রাজস্ব আদায়ের প্রধান এ সংস্থাটি।
রবিবার (২৫ মে) সকাল ৯টা থেকে এনবিআরের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থল ত্যাগ করে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনের নিচে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। আন্দোলনের ফলে এনবিআরের প্রায় সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে- সদ্য জারি করা অধ্যাদেশ বাতিল; বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ; রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ; অংশীজনদের মতামত নিয়ে টেকসই ও গ্রহণযোগ্য রাজস্ব সংস্কার বাস্তবায়ন।
গতকাল শনিবার (২৪ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির পক্ষে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত কর কমিশনার এদিপ বিল্লাহ, উপ-কর কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং সহকারী কর কমিশনার মো. ইশতিয়াক হোসেন। তারা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, রবিবার (২৫ মে) কাস্টম হাউস ও এলসি স্টেশন বাদে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালিত হয়।
রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কর্মবিরতির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা বাদে বাকি সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করবেন কর্মকর্তারা।
এক আন্দোলনকারী কর্মকর্তা বলেন, “আমরাও এনবিআরে সংস্কার চাই, কিন্তু সেটা হতে হবে অংশগ্রহণমূলক। স্বাধীনতার পর থেকে এনবিআরের চেয়ারম্যান প্রশাসন ক্যাডার থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে এনবিআরের দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা অবমূল্যায়িত হয়েছেন। এবার আবার দুটি বিভাগ গঠন করে দুজন সচিব বসানো হচ্ছে, যা আমাদের জন্য অসম্মানজনক।”
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ এবং ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করে। এরপর থেকেই এনবিআর কর্মকর্তারা সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনে নেমেছেন।