
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ডিবি পুলিশ আন্তঃজেলা ইজিবাইক চোরচক্রের মূলহোতাসহ ৫ আসামিকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রিয়াজুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের কাছে জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাত দেড়টার দিকে যশোর ও মাগুরা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন এক অভিযান চালানো হয়।
এ সময় ইজিবাইক চোরচক্রের সদস্য পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার বিলবিলাস এলাকার মৃত চান্দু মল্লিকের ছেলে হারুন মল্লিক ওরফে বাদল (৪২), নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বিলবাউস এলাকার আব্দুল লতিফ মোল্লার ছেলে মতিয়ার রহমান মোল্লা ওরফে মতিন (৫৫), নাটোর জেলার পারহাটঘড়িয়া এলাকার মৃত আজাহার শেখের ছেলে হাসান (৩৫), ফরিদপুর জেলার দক্ষিণ টেপখোলা এলাকার মৃত বদর উদ্দিন মল্লিকের ছেলে টিটু মল্লিক (৪৫) ও মাগুরা জেলার মহাম্মদপুর থানার বালিদিয়া এলাকার মুরাদের ছেলে শাহিদুল মোল্লা (২০) গ্রেফতার হয়।
গ্রেফতারের পর তাদের দেয়া স্বীকারোক্তিতে চুয়াডাঙ্গা থেকে চুরি হওয়া একটি ইজিবাইক মাগুরা মহাম্মদপুর থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া চোরাইকাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার, মাস্টার কী, সাংবাদিকের ভুয়া পরিচয়পত্র ও তাদের ব্যবহৃত ৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা বানানো একটি মাস্টার চাবি দিয়ে প্রায় সব ইজিবাইক সহজেই খুলে ফেলে। তারা পথিমধ্যে কখনো ইজিবাইক চালককে থামিয়ে একটি প্রাইভেটকার দেখিয়ে বলে, "প্রাইভেটকারের ভিতর থাকা স্যারের নিকট থেকে নাস্তার টাকা নিয়ে আসতে," কখনো দোকান থেকে খাবারের জিনিস এনে দিতে, কিংবা অন্যান্য মালামাল ক্রয় করতে বলে। ইজিবাইক চালক তাদের কথামত কাজ করতে গেলে চোরচক্র সদস্যরা ইজিবাইকের কন্ট্যাক্ট সুইজের তার কেটে অথবা মাস্টার চাবি দিয়ে চালিয়ে ইজিবাইক চুরি করে।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা ছোট শলুয়া গ্রামের ইজিবাইক চালক জাহাঙ্গীর আলম (৪৩) ১ ডিসেম্বর বেলা ১২টার দিকে ইজিবাইক চালানোর সময় চুয়াডাঙ্গা শহরের বাদুরতলা থেকে একজন যাত্রী নিয়ে কবরী রোড অভিমুখে রওনা হন। একপর্যায়ে তাকে থামিয়ে প্রাইভেটকারে থাকা ব্যক্তি নিজেকে ডিবি অফিসার পরিচয় দেয় এবং তাকে নিয়ে সরকারি কলেজ রোডে রওনা হয়। কিছুদূর যাওয়ার পর চালক জাহাঙ্গীর তীব্র প্রস্রাবের চাপ অনুভব করেন। তিনি ইজিবাইক রেখে রাস্তার পাশে গিয়ে প্রস্রাব করে ফিরে এসে দেখেন ইজিবাইক এবং প্রাইভেটকার উভয়ই নেই। এসময় জাহাঙ্গীর চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে, কিন্তু ইজিবাইক আর পাওয়া যায়নি। পরে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনার পর চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা ইজিবাইক চুরি চক্রের আসামিদের গ্রেফতারের জন্য কিছু কৌশল ও নির্দেশনা দেন। পুলিশ সুপারের সার্বিক দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবি ও চুয়াডাঙ্গা থানার টিম যশোর ও মাগুরা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতারকৃতদের ধরতে সক্ষম হয়।