Date: May 02, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / আন্তর্জাতিক / ইরাকের প্রাচীন শহরের এক অবহেলিত স্থাপত্য - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

ইরাকের প্রাচীন শহরের এক অবহেলিত স্থাপত্য

September 30, 2022 10:32:02 PM   আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরাকের প্রাচীন শহরের এক অবহেলিত স্থাপত্য

ইরাকের প্রাচীন শহর উরে হাজার বছর আগে নির্মাণ করা হয় চোখ ধাঁধানো স্থাপনা উরের জিগুরাত। মিসরীয়দের গর্ব যেমন পিরামিড, ঠিক তেমনি মেসোপটেমীয় সভ্যতার মানুষের গর্ব ছিল জিগুরাত। কালের পরিক্রমায় সমৃদ্ধ শহর উর তার গৌরব হারায়, অবহেলিত হয়ে পড়ে তার জিগুরাত। লিখেছেন তৃষা বড়ুয়া মেসোপটেমীয় সভ্যতা পশ্চিম এশিয়ার ঐতিহাসিক অঞ্চল মেসোপটেমিয়া। এই অঞ্চলে বয়ে চলেছে তাইগ্রিস ও ইউফ্রেতিস নদী। হাজার বছর আগে এই বিশাল দুই নদীর তীরে গড়ে ওঠা কৃষিনির্ভর মেসোপটেমীয় সভ্যতা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা। আজ আমরা যে ইরাক রাষ্ট্রের কথা জানি, তা মেসোপটেমিয়া অঞ্চলেই অবস্থিত। শুধু ইরাক নয়, কুয়েত এবং ইরান, সিরিয়া ও তুরস্কের অংশবিশেষ মেসোপমেটিয়া অঞ্চলের মধ্যে পড়েছে। প্রায় চার হাজার বছর আগে মেসোপটেমীয় সভ্যতার প্রশাসনিক রাজধানী ছিল উর। আধুনিক ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলে ধি কার প্রদেশের ধুধু মরুভূমিতে গেলে ওই উর শহরের ধ্বংসাবশেষের দেখা মিলবে। প্রত্নতাত্ত্বিক এই স্থানের স্বঘোষিত তত্ত্বাবধায়ক আবো আশরাফ ও হাতেগোনা কয়েকজন পর্যটক ছাড়া মাইলের পর মাইল আর কোনো প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে না। এই মরুভূমিরই এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে সুদৃশ্য বিশাল এক স্থাপত্য যাকে উরের জিগুরাত বলা হয়। এই জিগুরাতের বয়স ৪ হাজার ১০০ বছর। এটির গায়ের সিঁড়ি ভেঙে একেবারে ওপরে ওঠা যায়। উরের জিগুরাতের আশপাশে আধুনিক কোনো স্থাপনা নেই। শুধু জিগুরাতটির প্রবেশপথে শেকল লাগানো দরজা ও কংক্রিটে বাঁধানো পার্কিং লটই আধুনিক যুগের জানান দেয়। পার্থক্য, জিগুরাত দেখতে অনেকটা পিরামিডের মতো হলেও এই দুই স্থাপত্যের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। শুরুতে ধারণা করা হতো, প্রাচীন মিসরের ফারাও সম্রাটদের শেষ বিশ্রামের স্থান পিরামিড। তবে সাম্প্রতিক প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় দেখা গেছে, পিরামিড তৈরির মূল লক্ষ্য ছিল এর মাধ্যমে, যাতে ফারাওদের আত্মা স্বর্গে নির্বিঘ্নে যেতে পারে। অন্যদিকে মেসোপটেমীয় সভ্যতার মানুষ দেবতাদের থাকার জায়গা হিসেবে জিগুরাত নির্মাণ করে। তাই পুরোহিতরাই শুধু জিগুরাতের ভেতর প্রবেশ করতে পারতেন, আর কেউ নয়। এ ছাড়া জিগুরাতের একেবারে ওপরে একটি মন্দির নির্মাণ করা হতো। এ ছাড়া পুরোহিতদের জন্য থাকত সংরক্ষিত আশ্রয়ের স্থান। জিগুরাতের নিচের অংশ হঠাৎ প্লাবিত হলে বা অন্য কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে পুরোহিতরা সংরক্ষিত স্থানটিতে আশ্রয় নিতেন। মোদ্দা কথা, পিরামিড শুধু সমাধিস্থান, অন্যদিকে জিগুরাত অনেকটাই মন্দির। প্রাচীন মেসোপটেমিয়ায় জিগুরাত নির্মাণ করা হয় আর পিরামিড নির্মিত হয় প্রাচীন মিসর ও লাতিন আমেরিকায়। জিগুরাতের বাইরের অংশে চারপাশে সিঁড়ি ও চত্বর রয়েছে, পিরামিডে শুধু একটি দীর্ঘ সিঁড়ি দেখা যায়। পিরামিডের মতো জিগুরাতের ভেতরে কোনো কক্ষ নেই।
নকশায় পরিবর্তন
মেসোপটেমিয়ায় নির্মিত শুরুর দিকের জিগুরাতগুলো মিসরের পিরামিডের আগে নির্মাণ করা হয়। তাদের কয়েকটি এখনো ইরাক ও ইরানে রয়েছে। মিসরের পিরামিডের মতোই এই জিগুরাতগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। যুক্তরাষ্ট্রের কেইস ওয়েস্টার্ন রিসার্ভ ইউনিভার্সিটির এনশেন্ট নিয়ার-ইস্ট স্পেশালিস্ট ম্যাডালেনা রিউমার বলেন, ‘জিগুরাত এক ধরনের পবিত্র ভবন। ভবনটির একদম ওপরের মন্দিরে দেবতারা অবস্থান করেন বলে মেসোপটেমীয় সভ্যতার মানুষ বিশ্বাস করত।’ মেসোপটেমীয় সভ্যতার শুরুর দিকে যেসব জিগুরাত নির্মিত হয়, সেগুলোর নকশা অনেক সাধারণ ছিল। জিগুরাতের চূড়ায় ছোট বেদির ওপর এক কক্ষের মন্দির থাকত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জিগুরাতের মন্দির ও বেদির নকশায় পরিবর্তন আসে। কয়েক বছর পরপর এসব মন্দির ও বেদি ভেঙে পুনরায় নির্মাণ করা হতো। একই সঙ্গে মন্দির-বেদির আয়তনও বাড়ানো হতো। চারপাশে সিঁড়ি ও ওপরে খাঁজে খাঁজে চত্বর তৈরি করে এই স্থাপনার নকশা জটিল করা হয়।’
ঐতিহাসিক গুরুত্ব
জিগুরাত অব উর বা উরের জিগুরাত বেশ পরে নির্মিত হয়। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, প্রথম যুগের পিরামিডের প্রায় ৬৮০ বছর পর উরের জিগুরাত নির্মিত হলে সৌন্দর্য ও স্থাপত্যশৈলীর জন্য এটি বেশ সাড়া ফেলে দেয়। শুরু থেকেই এটি পিরামিডের মতো বেশ যত্নের সঙ্গে সংরক্ষণ করা হয়। মেসোপটেমিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী উরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কম নয়। ম্যাডালেনা রিউমারের মতে, মেসোপটেমিয়াতেই প্রথম কৃত্রিম সেচের মাধ্যমে ফসল ফলানো হয়। উরের মানুষ কৃষিকাজের জন্য খাল-বিল খনন করত, যাতে জলপ্রবাহ ব্যাহত না হয়। এ ছাড়া ইউফ্রেতিস নদীর পানি ব্যবহারের মাধ্যমে আরও বিস্তৃত এলাকা চাষাবাদের জন্য জলাশয় খনন করা হতো। উর শহর ঐতিহাসিকভাবে অন্য কারণেও বিখ্যাত। ধারণা করা হয়, বাইবেলের আব্রাহাম এ শহরেই জন্মগ্রহণ করেন। এ ছাড়া খ্রিস্টপূর্ব ২১০০ সালে সুমেরীয় ভাষায় পাথরখণ্ডে লেখা বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন জ্ঞাত আইন কোড অব উর-নাম্মু মেসোপটেমিয়ার উর শহরে লেখা হয়। ব্যাবিলনের ঐতিহাসিক ২৮২টি বিধান নিয়ে লেখা হাম্মুরাবি কোড অব ল’সের ৪০০ বছর পর লেখা হয়।
ম্যাডালেনা রিউমার বলেন, ‘মেসোপটেমিয়ার প্রতিটি শহর প্রতিষ্ঠা ও গড়ে তোলা হয় দেব/দেবীর বাসস্থান হিসেবে। ওই অঞ্চলের লোকজন দেব/দেবীদের শহরের রক্ষাকর্তা ও শাসক হিসেবে দেখত। ইউফ্রেতিসের নিম্ন প্রবাহে (যার কেন্দ্রে উর শহর অবস্থিত) বসবাস করা মানুষ নান্নাকে চাঁদের দেবতা হিসেবে পূজা করত। নান্নার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উর শহরে জিগুরাত নির্মাণ করা হয়। জিগুরাতের শীর্ষের মন্দিরে নান্না দেবতার উপাসনা হতো।’
উরের জিগুরাতের নিচের অংশ এখনো রয়েছে। তবে এর চূড়ায় থাকা মন্দির বা চত্বর আর নেই। উরের জিগুরাতের মন্দির বা ওপরের দিকের চত্বরগুলো দেখতে কেমন ছিল, তা জানার জন্য সব ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করেন প্রতœতাত্ত্বিকরা। একই সঙ্গে গ্রিক ইতিহাসবিদ হেরোডোটাসের লেখালেখি ও বাইবেল পড়ে উরের জিগুরাত সম্পর্কে জানাবোঝা বাড়ান তারা। ২০১৬ সালে ইতালির পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি অব তুরিনের প্রত্নতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞ এমেলিয়া স্পারাভিগনা তার নিবন্ধে বলেন, ‘পিরামিড আকৃতির জিগুরাতের শীর্ষ সমতল। এই সমতল অংশে অন্য ইটের পাশাপাশি রোদে পড়ানো ইট ব্যবহার করা হয়। এ কারণে জিগুরাতের শীর্ষ প্রায়ই উজ্জ্বল আলোয় চকচক করত।’
উর শহরের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে পাওয়া ধ্বংসাবশেষের ওপর নির্ভর করে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত যে, উরের জিগুরাতের মাথায় আকাশি নীল রঙের একটি মন্দির ছিল। ৭ লাখ ২০ হাজারের বেশি মাটির ইট (যেগুলোর প্রতিটির ওজন ১৫ কেজি) এই মন্দিরের ভিত তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। চন্দ্র ও সৌর চক্রের ভিত্তিতে জিগুরাতের চারটি কোণ উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমের দিকে মুখ করে নির্মাণ করা হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক এই স্থানের তত্ত্বাবধায়ক আবো আশরাফ বলেন, ‘আমি এই এলাকা খুব ভালোভাবে চিনি। ৩৮ বছর আগে আব্বার সঙ্গে এখানে এসেছিলাম। সে সময় প্রত্নতাত্ত্বিকদের তত্ত্বাবধানে এই স্থানে খননকাজ চলছিল। আমার আব্বাও খননকাজে অংশ নিয়েছিলেন। আমি তাকে মাঝেমধ্যে খননকাজে সহযোগিতা করতাম। পরে এই এলাকা ছেড়ে যাওয়া হয়নি আমার, এখানেই থেকে যাই। এই জিগুরাতের প্রবেশপথ থেকে কয়েক কদম এগোলেই আমার বাড়ি।’
মেসোপটেমিয়ার উর শহরের রাজা উর-নাম্মু খ্রিস্টপূর্ব ২১০০ সালে জিগুরাতের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এটির নির্মাণকাজ শেষ হয় তার ছেলে রাজা শুলগির আমলে। তত দিনে উর মেসোপটেমিয়ার উদীয়মান শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। তবে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যে মরুভূমির অত্যধিক তাপ ও রুক্ষ বালির কারণে উরের জিগুরাত ধসে পড়ে। এরপর খ্রিস্টপূর্ব ৫৫০ সালের দিকে ব্যাবিলনের রাজা নাবোনিদাস জিগুরাত পুনর্নির্মাণের কাজে হাত দেন। তিনি জিগুরাতের মূল নকশায় পরিবর্তনে এনেছিলেন। আদি জিগুরাত ছিল তিনতলার। রাজা নাবোনিদাস তিনতলার বদলে সাততলার জিগুরাত নির্মাণ করেন। এর মধ্য দিয়ে ব্যাবিলনের সে সময়ের বিশালাকৃতির স্থাপনার তালিকায় উরের নতুন জিগুরাতের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়।
প্রকৌশলীদের ভূমিকা
উরের জিগুরাতের বড় অংশই এখনো মরুভূমির বুকে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার প্রধান কারণ সুমেরীয় প্রকৌশলীদের তিনটি অনবদ্য উদ্ভাবন। প্রথমে বলা যায় অবাধে বায়ু চলাচল ব্যবস্থার কথা। অন্যান্য জিগুরাতের মতো উরের জিগুরাতের কেন্দ্র মাটির ইট দিয়ে নির্মিত। এই মাটির ইটের চারদিকে দেওয়া হয় রোদে পোড়া ইট। যেহেতু যেকোনো স্থাপনার কেন্দ্র আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে এবং এর ফলে পুরো ভবন ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে, এ কারণে সুমেরীয় প্রকৌশলীরা জিগুরাতের বাইরের দেয়ালে ক্ষুদ্রাকৃতির শত শত বর্গাকৃতির ছিদ্র রাখে, যাতে করে বাষ্পীভবনের কাজ দ্রুত হয়। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেইস ওয়েস্টার্ন রিসার্ভ ইউনিভার্সিটির এনশেন্ট নিয়ার-ইস্ট স্পেশালিস্ট ম্যাডালেনা রিউমার বলেন, ‘প্রকৌশলীরা এমনটা না করলে জিগুরাতের ভেতরের মাটির ইট ভারী বর্ষণের সময় নরম হয়ে যেত এবং একটা সময়ে পুরো স্থাপনা ভেঙে পড়ত।’ দ্বিতীয়ত, উরের জিগুরাতের দেয়াল ঠিক খাড়া নয়, একটু হেলানো। এভাবে নির্মাণের কারণ-দেয়াল হেলানো থাকলে পানি জিগুরাতের ধারঘেঁষে সহজে বের হতে পারবে। স্থাপনার ওপরের দিকে পানি জমে থাকার আশঙ্কা তখন আর থাকে না। তা ছাড়া এর অন্য সুবিধাও ছিল। দেয়াল হেলানো হওয়ার কারণে দূর থেকে জিগুরাতকে দেখতে অনেক বড় দেখাত। এতে সাম্রাজ্যের শত্রুরা ভয়ে কাছে ঘেঁষত না। সুমেরীয় প্রকৌশলীদের শেষ উদ্ভাবনী চমক ছিল মন্দিরের নির্মাণকৌশল। জিগুরাতের সবার ওপরে থাকা মন্দিরের পুরোটাই সেঁকা মাটির ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়। ইটগুলো যাতে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়, এজন্য বিটুমিন ব্যবহার করা হতো। এর ফলে আলকাতরা প্রাকৃতিকভাবে ভেতরের ইটে চুইয়ে চুইয়ে পানির প্রবেশ ঠেকাত।
পরিত্যক্ত উর
প্রকৌশলীদের এসব উদ্ভাবনী ক্ষমতার পরও অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি। ইউফ্রেতিস নদীর গতিপথে পরিবর্তন এলে একসময়ের সমৃদ্ধ শহর উর তার উজ্জ্বলতা হারাতে শুরু করে। শহরটিতে পানির অভাব দেখা দেওয়ায় তা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। শহরবাসী উর ছাড়তে শুরু করে এবং একপর্যায়ে এটি পরিত্যক্ত শহরে পরিণত হয়। সময় যত যেতে থাকে, বাতাসে ভেসে আসা মরুভূমির বালি ততই উরের জিগুরাতকে পুরোপুরি ঢেকে দিতে থাকে। ১৮৫০ সালের দিকে ফের উরের জিগুরাতের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর গত শতাব্দীর বিশের দশকে ব্রিটিশ প্রতœতাত্ত্বিক স্যার লিওনার্ড উলে জিগুরাতের খননকাজ শুরু করেন। খননকাজ চলাকালে চারপাশের সমাধি থেকে সোনার ছোরা, খোদাই করা মূর্তি, বীণাসহ বেশ কয়েকটি জিনিস পাওয়া যায়। তত্ত্বাবধায়ক আবো আশরাফ বলেন, ‘প্রতœতাত্ত্বিক স্থানটির মাত্র ৩০ শতাংশ এখন পর্যন্ত খনন করা হয়েছে। আরও অনেক কিছু পাওয়া বাকি।’অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা উরের জিগুরাত আধুনিক যুগের যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন তার দুটি যুদ্ধবিমান জিগুরাতের পাশেই রেখেছিলেন এই আশায় যে, ঐতিহাসিক ওই স্থানে যুদ্ধবিমান রাখলে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ বিমানগুলোতে আক্রমণ করবে না। দুর্ভাগ্যবশত, ওই যুদ্ধে উরের জিগুরাত অল্প হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০২১ সালে ইরাকের প্রাচীন শহর উর পশ্চিমা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। আয়ারল্যান্ডের ভ্রমণ সাংবাদিক জ্যানেট নিউয়েনহ্যাম বলেন, ‘২০২১ সালের জুলাইয়ে উরের জিগুরাতে গিয়েছিলাম। সে সময় পর্যটক প্রায় চোখেই পড়েনি। চলতি বছরের এপ্রিলে আবার সেখানে যাই। এবার কয়েকজন পর্যটকের দেখা পাই। তবে পর্যটকের সংখ্যা এখনো বেশ নগণ্য।’ পর্যটকের সংখ্যা যাই হোক না কেন, প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে মরুভূমির তপ্ত রোদ মাথায় নিয়ে পর্যটকদের সামনে উরের জিগুরাতের গুরুত্ব তুলে ধরেন আবো আশরাফ। তিনি বলেন, ‘অভিধান পড়ে ইংরেজি ভাষা রপ্ত করেছি। বেশির ভাগ পর্যটক জাপানি হওয়ায় টুকটাক জাপানি ভাষাও শিখছি।’