
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা:
'ন্যূনতম মজুরী ২২০০০ টাকা ঘোষণা কর-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের সূচনা কর' স্লোগানে আজ ১লা মে ২০২৩ইং রোজ সোমবার সকাল ১০:৩০টায় অলংকারমোড় চট্টগ্রাম ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার ও গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের চট্টগ্রাম জেলার যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস- ২০২৩ পালিত হয়েছে। উপলক্ষে শ্রমিক-কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার ও ন্যূনতম মজুরী ২২০০০ টাকা ঘোষণার দাবীতে শ্রমিক সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র্যালী অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মোঃ সোহাগ হোসেন মোল্লা এর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক বিউটি হাওলাদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় জেলার সহ-সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জনি শীল শিবু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শাহীন হাওলাদার, অর্থ সম্পাদক মোঃ ছিদ্দিক মুন্সি, দপ্তর সম্পাদক মোঃ অহিদুল আলম, নারী বিষয়ক সম্পাদক ফাতেমা আক্তার, প্রচার সম্পাদক মোঃ নুরুল ইসলাম, কার্যকরী সদস্য হালিমা বেগম ও সদস্য ছকিনা আক্তার প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মোঃ সোহাগ হোসেন মোল্লা বলেন, পাঁচ বছর পর পর মজুরি বোর্ড গঠন করে ন্যূনতম মজুরি পুনঃনির্ধারণের আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকলেও মজুরি কাঠামো গঠনের কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা দেখা যায়নি। বিশ্ববাজারের দোহাই এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির অজুহাতে ক্রমাগত পণ্যমূল্য বাড়ছে এবং বাড়ি ভাড়া, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। এর ফলে শ্রমিকদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। প্রকৃত মজুরি অর্ধেকে নেমে যাওয়ায় শ্রমিকরা অপুষ্টি আর কঠিনতম জীবনযাপন করছে। মানদণ্ড, বিভিন্ন গবেষণা, শিল্পের সক্ষমতা ও আমাদের পর্যালোচনায় গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের পরিবারের অন্ততপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ আয় করতে হলেও ২২ হাজার টাকার নিচে মজুরি দিয়ে কোনভাবেই হবে না। এমতাবস্থায় গার্মেন্টস শিল্প সেক্টরের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার টাকাসহ পাঁচটি গ্রেডে মজুরি কাঠামো ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি । দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। একটি দেশের উন্নয়নের অন্তরালে থাকে শ্রমিক-মজুরদের অক্লান্ত পরিশ্রম, ব্যথা-বেদনা। কিন্তু সে অনুযায়ী শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ছে না। যাদের ঘামে একটি একটি ইট সাজিয়ে বড় বড় ইমারতসদৃশ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তাদের যথাযথ সম্মান দেওয়া আবশ্যক। শ্রমিকদের যথাযথ মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। সেক্ষেত্রে আজকের দিনে আমাদের অঙ্গীকার হতে হবে সব শ্রমজীবী মানুষের অধিকার হোক সু-প্রতিষ্ঠিত এবং পৃথিবী হোক শান্তিময়।
সমাবেশে বক্তাগন নিম্নোক্ত দাবিগুলো ধরেন: ১. ৭ম গ্রেডের শ্রমিকদের জন্য ৬৫ ভাগ মূল মজুরীসহ ২২০০০টাকা ন্যূনতম মজুরী ঘোষণা কর। ২. শ্রম আইনের সংশোধনী প্রক্রিয়ায় শ্রমিক সংগঠনের প্রস্তাবনা বিবেচনায় নিয়ে শ্রমিক বান্ধব শ্রম আইন প্রণয়ন কর। ৩. আইএলও কনভেনশন-১০২, ১৮৯ ও ১৯০ অবিলম্বে অনুসমর্থন কর। ৪. শ্রমজীবি মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্য রেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত কর। ৫. শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে স্বান্ধ্যকালীন সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন কর । ৬. প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক সকল সেক্টরে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসের আইন কর। ৭. আসন্ন ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটে শ্রমিকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ দাবী জানান।