
দৌলতপুর প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া:
অনাবৃষ্টি, হালচাষ, শ্রমিক মজুরি, সার-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে লোকসানের শঙ্কা মাথায় নিয়ে আমনের লক্ষ্য মাত্রা পূরন হয়েছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে। বৃষ্টিনির্ভর আমন চাষ এবার পুরোপুরি সেচের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে চাষিদের।
এরই মধ্যে উপজেলা জুড়ে আমন খেতে দেখা দিয়েছে গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ। আমনচাষিরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করা হলেও কাজে আসছেনা। যদি এখনই মাজরা পোকার আক্রমণ ও গোড়া পচা রোগ দমন করা না যায়, তাহলে আমনের ফলন নিয়েও আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে চাষিদের সবধরনের সহায়তার পাশাপাশি পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য বলছে এবার উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ১৯ হজার ৮৭০ হেক্টর, চাষ হয়েছে ১৯ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে যা এবারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এছাড়া আমন চাষিদের মাঝে সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে ২ হাজার ২৫০ জন চাষিকে। এবার ফলনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ হাজার ৫৯২ টন চাল।
কথা হয় উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের হোসেনাবাদ এলাকার চাষি আসারুল ইসলামের সাথে। তিনি জানিয়েছেন এবার তার ১ বিঘা আমন চাষে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। মজুরি খরচ বিঘাপ্রতি ৬ জনকে দুই হাজার ৪ শত টাকা, চারা প্রতি বিঘাতে লেগেছে ২ দুই ৫ শত টাকা, সেচ খরচ ১ হাজার ৫ শত টাকা, জমি চাষের খরচ ১ হাজার টাকা, সার ও কীটনাশকে খরচ হয়েছে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৫ শত টাকা। ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত কতো খরচ হবে কে জানে।
কথা হয় একই ইউনিয়নের ফ্যাক্টরী পাড়া মাঠের চাষি জিল্লুর রহমানের সাথে। তিনি তার আমন খেতে পোকা দমনের জন্য কীটনাশক স্প্রে করছিলেন। তিনি জানান, গত দুইদিন আগেও স্প্রে করেছি কিন্তু পোকার উপদ্রব একনও কমেনি তাই আজ আবার স্প্রে করছি। পোকা না সারাতে পারলে এবার ফলও ভাল হবে না।
কথা হয় মশাউড়া এলাকায় আরেক আমন চাষি রফিকুলের সাথে। তিনি জানিয়েছেন, পুরো মাঠের ধানে গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে। তা ছাড়া বৃষ্টি কম হওয়ায় ধান কম বাড়ছে। ধান পরিপূর্ণ পানি পেলে পোকার আক্রমণ কমে যাবে আর ধান বাড়তেও থাকবে।
উপজেলার গড়ের মাঠের চাষি আব্দুল আজিজ বলেন, আবাদে প্রচুর খরচ এখন বৃষ্টির প্রয়োজন খুব, পোকায় ধান গাছ নষ্ট করে দিচ্ছে। এবার ফলন কেমন হবে বুঝতে পারছিনা। পোকা না সারাতে পারলে এবার লোকসান গুনতে হবে।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এবার আমন চাষের খরচ বাড়বে। এছাড়া পোকার উপদ্রব দেখা দিয়েছে চাষিদের পরামর্শের পাশাপাশি সরকারি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।এবারের আমন মৌসুমে ২ হাজার ২শ’ ৫০ জন চাষিকে সরকারি সহায়তার বিজ ও সার প্রদান করা হয়েছে।