
আব্দুল আলীম সাচ্চু:
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিভিন্ন স্থানে মৌসুমি ফল লিচুর সুরক্ষায় কারেন্ট জালের ব্যবহার বেড়েছে। এতে করে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ওই জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। প্রশাসনের নীরবতায় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা অবাধে পাখি শিকার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, লিচু গাছের ওপর কারেন্ট জাল বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কোথাও কোথাও গোটা লিচু বাগানের চারদিকে কারেন্ট জাল টানানো আছে। বিভিন্ন বাগানে টানানো জালে জীবিত ও মৃত পাখি ঝুলছে। আবার কোথাও কোথাও পড়ে আছে পাখির মরদেহ। কোনো কোনো বাগান মালিক পাখি শিকার করে তা রান্না করেও খাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
পাখি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে। কিছু কিছু পাখি অর্থাৎ নিশাচর জাতীয় পাখি বিষাক্ত সাপ ও ইঁদুর খেয়ে ফসল রক্ষা করে। ফসলের ওপর থেকে বিরূপ প্রভাব ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার্থে পাখি রক্ষায় প্রশাসনকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। এমনটাই দাবি করেন সুশীল সমাজের আপরদিকে উপজেলার সীমান্তবর্তী প্রাগপুর, বিলগাতুয়া, ধর্মদাহ, সহ প্রায় সব কয়টি গ্রামের লিচু বাগান মালিকদের দাবি, পাখি শিকারের কোনো উদ্দেশ্য নয়, পাখিরা বাগানের ফল খেয়ে ও নষ্ট করে। এদের কবল থেকে ফল রক্ষার্থে কারেন্ট জাল ব্যবহার করা হয়েছে। পাখি শিকার একটি জঘন্যতম অপরাধ এটি স্বীকার করে গাছ থেকে জাল সরিয়ে নেয়া হবে বলেও জানান অনেকে।
এদিকে অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক, সামাজিক আর সৌন্দর্য্যগত দিক দিয়ে পাখির গুরুত্ব অপরিসীম জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাখি নিধন পরিবেশের ভারসাম্য ও খাদ্য শৃঙ্খলে বিঘ্ন ঘটায়, যার প্রভাব পড়ে মানবজাতির ওপর। লিচু ক্ষেতে বাগানের পর বাগান চারিদিকে কারেন্ট জালের ফাঁদ। পাখির হাত থেকে লিচু ক্ষেতের ফল ও ফসল রক্ষায় এই কারেন্ট জাল ব্যবহার করে আসছে বাগান মালিক ও কৃষকরা।
পশুপাখি প্রেমি জনি বলেন, ক্ষুধার্ত পাখিরা শুধু নয়, অনেক নিরীহ পাখি যারা তপ্ত রোদ থেকে বাঁচার জন্য ছায়া খোঁজে তারাও জালে আটকা পড়ে। জালের ফাঁদ নয়, পাখির কিচিরমিচিরে প্রাণ ফিরে পাক প্রকৃতি, ভারসাম্য ফিরে আসুক পরিবেশে।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘পাখি শিকার জঘন্যতম অপরাধ। সরেজমিনে গিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’