
দৌলতপুর সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া:
দেশে বিদ্যমান ধুমপান ও তামাক জাত ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) এবং বিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী পাবলিক প্রেসে এ ধুমপান আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। উল্ল্যেখিত আইনানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ পাবলিক প্লেসের অন্তর্ভুক্ত।
এদিকে ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সেই বিড়ি, সিগারেট কিংবা তামাকে আসক্ত হয়ে পড়ছে বেশির ভাগ শিশু কিশোর। কুষ্টিয়া জেলার সব কটি উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এসব নেশার টানে বিভোর। লোকজনের আড়াল হয়ে সিগারেট কিংবা বিড়ি জ্বালিয়ে নেশা করছে এসব শিশু কিশোররা। অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় শিশু কিশোররা এভাবে জড়িয়ে পড়ছে তামাক দ্রব্য নেশায়। তামাকের এ নেশা দিয়ে শুরু করে ক্রমেই জড়িয়ে পড়ছে অন্যান্য মাদক সেবনে। এর মধ্যে সিমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলা অন্যতম। সিমান্তে ঘেসা উপজেলা হওয়ায় মাদকের স্বর্গ রাজ্য হয়ে উঠেছে এ উপজেলাটি।
উপজেলার বেশ কয়েকটি স্কুল ঘুরে দেখা যায়, স্কুলের গেটের সামনে পান সিগারেটের দোকান, আর দোকানগুলোতে দেশ বিদেশের বাহারি রং-বেরংয়ের সিগারেট যা স্কুল পড়ুয়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের সিগারেটের নেশার আগ্রহ বাড়াচ্ছে, পাশা পাশি দোকানের ভিতর বা দোকানের পিছনে শিক্ষার্থীদের সিগারেট খাওয়ার গোপন যায়গাও করে রেখেছে দোকানিরা। আর এসব নেশার টাকা সংগ্রহ করছে বাবা-মায়ের পকেট থেকে। এক সময় সেটাও যখন সম্ভব হয়না তখন ছোটখাটো চুরির মতো যঘন্য কাজেও বাধ্য হচ্ছে নেশার টাকা সংগ্রহ করতে।
আইনগতভাবে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের কাছে সিগারেট কিংবা বিড়ি বিক্রি করা নিষিদ্ধ থাকলেও সে আইন মানে না দোকানিরা। এ কারণে ছোটরা খুব সহজে তামাকজাতীয় নেশা সংগ্রহ করতে পারে।
নাম গোপন রাখার শর্তে এক অভিভাবকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমার ছেলে ক্লাস নাইনে পড়ালেখা করে, সম্প্রতি বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে সিগারেটের নেশায় জড়িয়ে পড়েছে, এখন ছেলেকে কিছু বলতে গেলে হিতে বিপরিত হচ্ছে। অভিভাবক আরো বলেন বেশির ভাগ সন্তান ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সে সিগারেট কিংবা বিড়ি সেবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে, আমরা কর্মেব্যস্ত থাকার কারণে আমাদের সন্তানদের খোঁজ নেওয়ার সময় হয়ে ওঠে না। একারণে ওই সকল শিশু কিশোর তামাকের নেশায় জড়িয়ে পড়ছে।
শিশুদের অল্প বয়সে ধূমপানে জড়িয়ে পড়া সম্পর্কে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল ইসলাম তুহিনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, শিশুদের অল্প বয়সে ধূমপানের করনে ফুসফুস জাতীয় বিভিন্ন রকম রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। সেই সাথে যক্ষা ও অ্যাজমার মত জটিল রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। পাশাপাশি অল্প বয়সে শরীরের নিকোটিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাদের ব্রেনের প্রচুর পরিমাণে ক্ষতি হয়।
এবিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ওবাইদুল্লাহ বলেন, বিষয়টি সরোজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।