Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / জাতীয় / নারী-শিশুদের উপর নির্যাতন মেনে নেওয়ার মতো নয় : আয়েশা সিদ্দিকা - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

নারী-শিশুদের উপর নির্যাতন মেনে নেওয়ার মতো নয় : আয়েশা সিদ্দিকা

March 05, 2025 01:07:07 AM   নিজস্ব প্রতিবেদক
নারী-শিশুদের উপর নির্যাতন মেনে নেওয়ার মতো নয় : আয়েশা সিদ্দিকা

নিজস্ব প্রতিবদেক:
নারী সংগঠক আয়েশা সিদ্দিকা রংপুরের পীরগাছা এলাকায় ঘটে যাওয়া অত্যাচারের দৃশ্য নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের ভাইবোনেরা আজ নির্যাতনের শিকার। সেখানে নারী ও শিশুরা উদ্বাস্তু অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। আপনারা নিশ্চয়ই একটি ভিডিও দেখেছেন, যেখানে এক নারী আর্তনাদ করছেন- তিনি গাভী পালতেন, কিন্তু তার গাভী ও বাছুরসহ প্রকাশ্যে লুটপাট করা হয়েছে। ডাকাতরা সাধারণত রাতের অন্ধকারে লুটপাট চালায়, অথচ এখানে দিবালোকে প্রকাশ্যে লুটপাট হয়েছে! যারা এই কাজ করেছে, তারা কীসের ভিত্তিতে নিজেদের ধর্মপ্রেমিক দাবি করে? আর যারা এসব বর্বরতাকে সমর্থন দিচ্ছে, তারা কি সত্যিই ন্যায় ও নৈতিকতার পক্ষে? তারা একদিকে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে, অন্যদিকে নিরীহ মানুষের সম্পদ লুট করছে।”

মঙ্গলবার রংপুরে ঘটে যাওয়া হেযবুত তওহীদের উপর পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, "তারা বলছে, ‘হেযবুত তওহীদ নারীদের পেছনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ায়’। কিন্তু তারা কি একটাও প্রমাণ দিতে পারবে? এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা, যা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চালানো হচ্ছে। আসলে, ধর্মের নামে অপপ্রচার চালিয়ে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।"

আয়েশা সিদ্দিকা সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ জানান, "আপনারা দেখুন, রংপুরের পীরগাছায় আমাদের নারীরা-শিশুরা কতটা অসহায় হয়ে পড়েছে। তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে, উদ্বাস্তু অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। এটা কি স্বাধীন বাংলাদেশের চিত্র? বাংলাদেশ কোনো যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া বা ফিলিস্তিন নয়, এখানে নারী ও শিশুরা কেন নিরাপত্তাহীনতায় থাকবে?"

তিনি আরও বলেন, "হেযবুত তওহীদের নারীরা সক্রিয়ভাবে সমাজের বিভিন্ন খাতে কাজ করছে, এটি কি অপরাধ? ইসলামের ইতিহাসে নারীরা সবক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। নবী করিম (সা.)-এর যুগে নারীরা যুদ্ধক্ষেত্রে পর্যন্ত অংশ নিয়েছেন, সমাজের কল্যাণে ভূমিকা রেখেছেন। আমরাও শালীনতার সঙ্গে জাতীয়, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছি। কিন্তু কিছু গোষ্ঠী আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে যে, আমরা নাকি পর্দার বিধান লঙ্ঘন করছি।"

তিনি যোগ করেন, "কোথায়, কীভাবে আমরা পর্দার বিধান লঙ্ঘন করেছি? কেউ কি প্রমাণ দিতে পারবে যে আমাদের নারীরা অশ্লীল পোশাক পরে চলে, নাকি কোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত? রংপুরে আমাদের হাজার হাজার নারী সদস্য কাজ করছেন, তারা কি বেপর্দা চলাফেরা করছেন? না, তারা শালীনতার সঙ্গে, ইসলামের গণ্ডির মধ্যেই কাজ করছেন।"
সিদ্দিকা আরও বলেন, "যখন আমরা নারীদের ঈদের জামাতে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছি, ইসলাম প্রচারের কাজে যুক্ত করছি, তখন তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। তারা চায় না, নারীরা সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখুক। তারা চায়, নারীরা ঘরে আবদ্ধ থাকুক, কোনো মত প্রকাশ করতে না পারুক। কিন্তু ইসলামে এমন কোনো বাধা নেই! বরং ইসলাম নারীদের সম্মানজনকভাবে সমাজের কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছে।"

শেষে তিনি বলেন, "যারা ধর্মের নামে অপপ্রচার চালায়, মিথ্যা রটায়, তারা আসলে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করছে। আমরা চাই, সরকার ও প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে বিচার করুক এবং যারা অন্যায়ভাবে আমাদের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনুক।"