
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সারা জীবন জনগণের সেবা করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও বাংলাদেশ ব্রিকস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিরোজ হায়দার খান।
তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আমি যেভাবে পারি এই উপজেলার অনুন্নত এলাকাগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে সেগুলোকে উন্নত করার জন্য কাজ করবো। আমি উপজেলার দুস্থ-গরীব মানুষদের পাশে থেকে তাদের সেবা করতে চাই। আমি কোনো নির্দিষ্ট এলাকা বা ইউনিয়ন নয় বরং যেসব এলাকা অনুন্নত, অবহেলিত সেসব এলাকার জন্য আগে কাজ করতে চাই। আমি উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে সারা জীবন জনগণের সেবা করতে চাই।
সোমবার (২০ মে ২০২৪) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলাধীন গোড়াই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক আলোচনা সভা ও নির্বাচনী প্রচারণা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমি নির্বাচন গত পাঁচ বছর আগে নির্বাচন করেছিলাম। আমি গতবার পাশ করেছিলাম জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিন্তু রাজনৈতিক কূটকৌশলের কাছে হেরে গিয়েছি। তবে গত নির্বাচনে আমি শিখেছি, নির্বাচনের কোথায় ত্রুটি হয় কীভাবে এই ছলচাতুরি হয়; সেগুলো আমি স্বচক্ষে দেখেছি। তিনি বলেন, ভোট চুরি করার কৌশল আমি আর সফল হতে দেব না। প্রতিটি কেন্দ্রে আমার লোক থাকবে। আজকে গত প্রায় দুই মাস যাবত আমি প্রত্যেকটা ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে প্রত্যেকটি ওয়ার্ড কর্মী নিয়োগ করেছি।
এবারের নির্বাচনে দুর্নীতি করে ভোট নেওয়ার ক্ষমতা মির্জাপুরের কারও নেই। আপনারা শুধু একটি কাজ করবেন, সেটি হলো- ভোটারদেরকে কীভাবে ভোটকেন্দ্রে আনা যায় এবং সবাই যাতে ভোট দেয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আপনাদের যেখানে যাদের আত্মীয় আছে তাদের সাথে কথা বলেন, তাদেরকে বলেন ভোট দেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, গত পরশুদিন আজকের এই মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কালকেই সবাইকে বলা হয়েছে। অনেককে আজকেও বলা হয়েছে। তার মধ্যেই আপনারা যে সাড়া দিয়েছেন, এটাতে আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এই নির্বাচনে আমি জয়ের আশা করি। কারণ এই নির্বাচনেও গতবারের মত জনগণ আমার সাথে আছে।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশ ব্রিকস অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। আমাকে কত উপজেলা চেয়ারম্যান ভোট দিয়েছে, কত এমপি মহোদয় আমাকে ভোট দিয়েছে, বর্তমানে ভূমি মন্ত্রীও আমার ভোটার, মেয়র সাহেবরা আমাকে ভোট দিয়েছে অথচ আমি নিজে একটা উপজেলা চেয়ারম্যানের চেয়ারেও আমি বসতে পারি নাই। অনেকে বলেন, এত বড় পদে থাকা সত্ত্বেও উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য এত দৌড়াদৌড়ি করছেন কেন? আমি বলতে চাই, আমি জনগণের সাথে কাজ করতে চাই, জনগণের সেবা করতে চাই। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আমার এলাকায় কোথায় জনগণের অসুবিধা, মানুষদের চলাচলের অসুবিধা, হাসপাতালের অভাবে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যায়, প্রসূতি মায়েদের প্রসবে সমস্যা হয় ইত্যাদি সমস্যা সমাধান করতে চাই। এলাকার মানুষের শিক্ষার প্রসার, বেকারদের কর্মসংস্থান, দুস্থদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা ইত্যাদি নিয়ে কাজ করবো ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলতে চাই, আমার ভিতরে ক্ষমতার মোহটা কোথায়? আমি টাকা পয়সা কামানোর জন্য নির্বাচন করছি নাকি মানুষের সেবা করার জন্য, জনগণের উপকার করার জন্য। আপনারা গোড়াই ইউনিয়নের মানুষেরা যেভাবে আমার সাথে রয়েছেন তাতে আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি বিশ্বাস করি, আগামী জুনের পাঁচ তারিখ বিজয়মালা পরবো ইনশাল্লাহ। আল্লাহপাক বিজয় আমাদের জন্য রেডি করে রেখেছেন এবং আমরা সে বিজরের মালা নিয়ে আসবো এবং আপনাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করবো ইনশাল্লাহ।
বিশিষ্ট সমাজসেবক ওমর খান পন্নীর সভাপতিত্বে ও আব্দুর রাজ্জাক সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বদরুন্নাহার খান, চেয়ারম্যান আলী হোসেন রনি, হাজী সোহরাব আলী, মো. বোরহান উদ্দিন, তোজাম্মেল হোসেন, তপন হাসান খান, মল্লিক আকরাম মাস্টার, নেহাজ উদ্দিন মাস্টার, বাদশাসহ অত্র এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ফিরোজ হায়দার খানের কর্মী-সমর্থক, পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী। ওমর খান পন্নীর সমাপনী বক্তব্য শেষে ফিরোজ হায়দার খান সকলকে নিয়ে তার পিতা মরহুম হাবিবুর রহমান খান, মাতা শামসুর রহমানসহ অন্যদের কবর জিয়ারত করেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি ওমর খান পন্নীর সমাপনী বক্তব্য শেষে ফিরোজ হায়দার খান সকলকে নিয়ে তার পিতা মরহুম হাবিবুর রহমান খান, মাতা শামসুর রহমানসহ অন্যদের কবর জিয়ারত করেন।
উল্লেখ্য ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী চতুর্থ ধাপের মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল গত ৯ মে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয় ১২ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ মে। প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করা হয় গতকাল ২০ মে এবং ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৫ জুন। এ উপজেলাটি ১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬২ হাজার ৮শত ৫১ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮৩ হাজার ১শত ১৩জন, মহিলা ভোটার ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭শত ৩২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ৬ জন।